এমডি মুন্না, জগন্নাথপুর

০৫ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ০২:০৬

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন : ঢাকামুখি প্রার্থীরা, চলছে জোর লবিং

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন ঢাকামুখি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। মনোনয়ন পেতে তারা জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলের প্রধানের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন এবং নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

জানা যায়, আগামী ৬ মার্চ জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর লবিং করে যাচ্ছেন। এমনকি তাঁদের সমর্থকেরা নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণা করে যাচ্ছেন। এই উপজেলার আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে একাধিক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিবদমান দুই গ্রুপ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান এমপি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত আব্দুস সামাদ আজাদের তনয় আজিজুস সামাদ ডন গ্রুপের অনুসারিরা। এই দুই বলয়ের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিন থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং ইতোমধ্যে অনেকেই ঢাকায় অবস্থান করছেন। এমনকি তাঁদের সমর্থনে অনেকেই যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় অবস্থান করেছেন বলে অনেকেই জানান।

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পাশাপাশি প্রবাসীরাও বিশেষ ভূমিকা রাখতে আসছেন বলে অনেক প্রার্থীরা জানান।

উভয় গ্রুপের অনুসারিরা জানান- আমরা ইতোমধ্যে তৃনমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বর্ধিত সভা করেছি এবং প্রার্থীদের নাম প্রস্তাবও করেছি। তাঁদের নাম নিয়ে জেলা আ’লীগের সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। উভয় গ্রুপের প্রায় দুই ডজন প্রার্থীদের মধ্যে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান এমপির অনুসারির চেয়ারম্যান পদসহ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই ১০ জন প্রার্থীদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান আকমল হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা, পাটলী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হক, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আরশ মিয়া এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা বিজন কুমার দেব, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা মুজিবুর রহমান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি লিটন তালুকদার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আকমল হোসেন বলেন, আমরা প্রস্তাবিত নামগুলো জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের কাছে নিয়ে যাব।

অপরদিকে, আজিজুস সামাদ ডন গ্রুপের অনুসারিরা তিন পদের জন্য ১১ প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করেন এবং ওই নামগুলো নিয়ে জেলার দায়িত্বশীলদের কাছে যাবেন বলে ওই বলয়ের নেতা পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মনাফ জানান।

তিনি আরো জানান, আমার তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান পদে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি ও যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি মোহাম্মদ হরমুজ আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মিন্টু রঞ্জন ধর, পাটলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আঙ্গুর মিয়া এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র, আওয়ামীলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম বকুল, উপজেলা আওয়ামীলীগ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ শেফুল আমীন, উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগ সাবেক আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজেরা বারী, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার পারুল ও শান্তনা বেগম এর নাম জেলার কাছে পাঠিয়েছি এখন জেলা যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন আমরা তা মেনে নিব।

তবে সংগঠনের অনেকে নেতাকর্মীরা জানান, দলের হাই কমান্ড যদি প্রার্থী নির্বাচনে ভুল করলে এই ভুলের মাশুল দিতে হবে ৬ মার্চের নির্বাচনে। তাঁরা আরো বলেন, প্রার্থী নির্বাচনে সর্তক অবস্থানে থাকতে বলে দলটির দায়িত্বশীল নেতাদের এবং সঠিক প্রার্থী মূল্যায়ন না হলে হারাতে হবে এই এলাকার আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অবস্থান। তারা দাবি করেন সঠিক প্রার্থী নির্বাচন করতেও।

তবে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, আমরা এখনো কোনো তালিকা পাইনি। তালিকা পেলে সংগঠনের দায়িত্বশীলদের কাছে নিয়ে যাব এবং তাঁদের সিদ্ধান্তনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচিত করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত