নিজস্ব প্রতিবেদক

০৩ এপ্রিল, ২০১৭ ১৮:৫৬

আতিয়া মহল বিস্ফোরকমুক্ত করতে সময় লাগবে: র‌্যাব

ভবন থেকে দুই জঙ্গির মৃতদেহ উদ্ধার, এখনো কোন বিস্ফোরক পায়নি বোম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড

নগরীর শিববাড়ির আতিয়া মহলে সেনাবাহিনী পরিচালিত “অপারেশন টোয়াইলাইট” গত ২৮ মার্চ শেষ হওয়ার ৬দিন পর, সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে বোমা নিষ্ক্রিয় করা ও ভিতরে থাকা দুই জঙ্গির মৃতদেহ উদ্ধারে অভিযান শুরু করে র‌্যাব।

দিনশেষে, সন্ধ্যা ৬টায় আতিয়া মহলের পাশে র‌্যাবের একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে রবিবার থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান সম্পর্কে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের ব্রিফ করে র‌্যাব-৯।

র‌্যাব-৯ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ বলেন, শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে সোমবার দুপুর ১২টা থেকে আতিয়া মহলে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণ ও মৃত দুটি দেহ উদ্ধারে কাজ শুরু করে র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড।

এ বোম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম মাহমুদ।

আতিয়া মহল অভিযানের পরপরই মৌলভীবাজারে দুটি ও কুমিল্লায় একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করার কারণে আতিয়া মহলে কার্যক্রম শুরু করতে দেরী হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ থেকে প্রয়োজন ছিল দুই জঙ্গির মৃতদেহ উদ্ধার করা, আর ভবনের নিচতলা থেকে দুই জঙ্গির দেহাবশেষ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়, যা ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজাদ আরো জানান, উদ্ধারকৃত ‍দুটি দেহই পুরুষের এবং অপারেশনের টোয়াইলাইটের শেষদিন দুই জঙ্গির দেহের আত্মঘাতি ভেস্ট বিস্ফোরণের কারণে এবং ভবনের ভেতরেই ৬দিন পরে থাকায় তাদের চেহারা বোঝার অবস্থা নেই।

তিনি বলেন, প্রথমদিন র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের অভিযানের মুল উদ্দেশ্য ছিল মৃতদেহদুটি উদ্ধার করা এবং প্রথমদিন ভবন থেকে কোন বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়নি।

র‌্যাব-৯ এর কমান্ডিং অফিসার আরো বলেন, ভবনের ভিতরে জঙ্গিদের রেখে যাওয়া বোমা যেমন থাকতে পারে, তেমনি সেনাবাহিনী যে সকল বিস্ফোরক ব্যবহার করেছিলো, তার মধ্যে থেকেও অবিস্ফোরিত বোমা থাকতে পারে।

বোমা উদ্ধার অভিযানে আরো সময় লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, মোট কতদিন সময় লাগবে তা এখনি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, তবে সময় লাগবে।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে আবারো বোমা উদ্ধারে অভিযান শুরু হবে বলে তিনি জানান।

র‌্যাবের এ অভিযানের সহযোগিতায় রয়েছে সিলেট মহানগর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

গত ২৪ মার্চ আতিয়া মহলের একটি ফ্ল্যাটে জঙ্গি অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তা ঘিরে রাখে পুলিশ। পরে প্রথমে সেখানে সোয়াট ও পরে সেনাবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে, যাতে চার জঙ্গি নিহত হয়, যার মধ্যে দুটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছিলো।

টানা চার দিন 'অপারেশন টোয়াইলাইট' নামক অভিযান শেষে গত মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে সেনাবাহিনী।

তখন আতিয়া মহলের ভেতরে আরো বোমা থাকার আশঙ্কার কথা জানায় তারা। এছাড়াও উদ্ধার না হওয়া দুই জঙ্গির মৃতদেহ ভবনের ভিতরেই রয়ে যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত