বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি

০৫ জুলাই, ২০১৭ ২০:০১

বিয়ানীবাজারে বন্যা কবলিত এলাকায় বাড়ছে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ

সিলেটের বিয়ানীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও নদী ভাঙন ও পানিবাহিত রোগের প্রকোপে দিশেহারা এলাকার মানুষ। তবে বিয়ানীবাজারে নদীতে নতুন করে পানি বৃদ্ধি পায় নি।

সীমান্তের ওপার থেকে আসা পানির গতি অনেকটা হ্রাস পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ফলে কুশিয়ারা নদীর পানি ধীরে ধীরে কমছে। ৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে এ পর্যন্ত ১০২টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

সিলেট-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের মেওয়া, আঙ্গারজুর, তেরাদল ও বৈরাগীবাজার এলাকার রাস্তা থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। মঙ্গলবার (৪ জুলাই) থেকে যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিক হয়েছে কিন্তু ‘বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকারি ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থরা।

আশ্রয় কেন্দ্রে ভাইরাস জ্বরে অক্লান্ত লোকজনের সংখ্যা বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে ১৬টি ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়েছে। এ পর্যন্ত ৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে নারী, পুরুষ ও শিশু পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

প্লাবিত এলাকা থেকে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। বন্যার উন্নতি হওয়ার সাথে সাথে দৃশ্যত মানুষের মধ্যে স্বস্তিতে ফিরে আসার কথা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বন্যার পানি হ্রাস পাওয়ার পর সমস্যাটা আরো অনেক বেশি বাড়ে। বাড়ি-ঘর, রাস্তা, ফসলের মাঠে কাদা-মাটির স্তর পড়ে যায়। কাদা-মাটি পরিস্কার না করতে পারলে স্বাভাবিক কোন কাজ করা যায় না।

এছাড়া বন্যা উপদ্রুত এলাকায় পানি কমতে শুরু করায় স্থির পানি পচে, ঘনত্ব বেড়ে দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়েছে। পানির ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ার কারণে পানি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে পান না করলেও পরোক্ষভাবে এ ঘন ও পচা পানি পেটে যাওয়ায় ডায়রিয়া ও আমাশয় ভুগছে মানুষ।

বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মাসুম আহমদ বলেন, বন্যার্তদের ঔষধ ও পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট প্রদান করা হচ্ছে। ৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু পাওয়া গেছে। ডায়রিয়া ও ভাইরাস জ্বর আক্রান্ত আরও ১৩জন নারী-পুরুষদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. আসাদুজ্জামান বলেন, কুশিয়ারা নদীর সবকটি পয়েন্টে পানি কমতে দেখা গেছে। পানি কমলেও বন্যা কবলিত এলাকায় বিভিন্ন ধরণের পানিবাহিত রোগে প্রকোপ বেড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ভ্রাম্যমাণ মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। বিয়ানীবাজার সাড়ে ১৪ মেট্রিক টন, ৩২ হাজার টাকা ও ৪ হাজার ৯৫০টি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে ।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত