গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি

৩০ জুলাই, ২০১৭ ০১:৩৩

গোলাপগঞ্জের সব সড়কই ভাঙ্গাচোরা, যাত্রীদের নরক যন্ত্রণা

গোলাপগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিডি)-এর আওতাধীন ২২৭টি পাকা সড়কের এখন বেহাল বেহাল অবস্থা। অনেক সড়কের কালো পিচ ওঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।

রাস্তাগুলোতে বড় বড় গর্ত থাকার কারণে বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে থাকে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। রাস্তাগুলোর এমন করুণ হাল হলেও তা সংস্কারের তেমন উদ্যোগ নেই। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই উপজেলা লক্ষাধিক মানুষের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সাম্প্রতিক ভারি বর্ষণে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পাকা রাস্তাগুলো ভেঙে চৌচির হয়ে পড়েছে।

জানা যায়, পৌর সদর থেকে ঢাকাদক্ষিণ, ঢাকাদক্ষিণ-মোগলা বাজার, ঢাকাদক্ষিণ -ভাদেশ্বর, গোলাপগঞ্জ-শিকপুরসহ উপজেলার প্রায় সবকটি রাস্তার বেহাল দশা। এসব রাস্তার স্থানে স্থানে ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। কোথাও সৃষ্টি হয়েছে পুকুরসম গর্ত। বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রায় সময় ঘটে দুর্ঘটনা। রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে এসব গর্তে পড়ে যানবাহন নষ্ট হয়ে আটকে থাকে রাস্তার ওপর। এতে প্রায়ই সৃষ্টি হয় যানজট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকা পড়তে হয় যাত্রীদের।

এছাড়াও উপজেলার আঞ্চলিক সড়কগুলোর একই অবস্থা। বুধবারীবাজারের কুশিয়ারা নদী ডাইক রাস্তাটি ভেঙ্গে মরণ ফাদেঁ পরিণত হয়েছে। আগেই রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ায় চলতি বন্যায় এ ভাঙ্গনে ভয়ংকর রুপ ধারণ করছে। ফলে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেন লোকজন। তাছাড়া কটলীপাড়া ভায়া বসন্তপুর রাস্তাটির অবস্থা একইভাবে বেহাল। চন্দপুর আল এমদাদ উচ্চ কলেজের রাস্তা ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করছেন।

বাণিগাজী জামে মসজিদ থেকে কটলীপাড়া ভায়া চন্দরপুরের রাস্তারও একই অবস্থা। কালিজুরী জামে মসজিদ থেকে মাদ্রাসা রাস্তার অবস্থাও বেহাল। লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের ফুলসাইন্দ থেকে পাহাড় লাইনের রাস্তাটি ভেঙ্গে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। পুরকায়স্তবাজার ভায়া কোনাচর জামিটিকির রাস্তাটি ভেঙ্গে একাকার হয়ে যাওয়ায় এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে লোকজন ভয় পায়। পুরো রাস্তাটি স্থানে স্থানে ভাঙ্গা। এছাড়া রসের দোকান থেকে জাঙ্গালহাটা রাস্তাটির অবস্থা একেবারেই করুণ। কমলগঞ্জ ভায়া পুরকায়স্থ বাজারের রাস্তাটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে ঝুঁকি নিয়ে এসব জরাজীর্ণ রাস্তা দিয়ে লোকজন চলাচল করলেও যেন দেখার কেউ নেই। লক্ষিপাশার নয়াগুল ভায়া কটলীপাড়া ভায়া মোকামবাজারের রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে অনেক আগেই।

পূর্ব রেঙ্গা হাইস্কুল থেকে দেওয়ান সড়ক ভায়া বাইশ মোরা পর্যন্ত রাস্তাটির পিচ উঠে গেছে । দেওয়ান সড়ক থেকে শ্রীবহর গ্রামের রাস্তাটি ভেঙ্গে খালখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে এ রাস্তা দিয়ে লোকজন চলাচল করছেন দুর্ভোগকে সঙ্গী করে। ঘোষগাঁও ভায়া কদমতলী ভায়া দেওয়ান সড়কের বেশীরভাগ অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। অনেক সময় যাতায়াতের সময় গাড়ি মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া ঘাসিবর্ণির রাস্তাটির অবস্থাও নাজুক।

মীরগঞ্জ বাজার থেকে ফতেহপুর মাঝপাড়া পর্যন্ত নদীপাড়ের রাস্তা জন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মীরগঞ্জ বাজারের পশ্চিম থেকে ফতেহপুর পর্যন্ত রাস্তাটির ভেঙে পিচ মাটির সাথে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এছাড়া শয়তানের খাল পশ্চিম পাড় থেকে প্রায় ১২শ ফুটের রাস্তার কোন চিহ্ন নেই। ফতেহপুর পূর্ব জামে মসজিদ থেকে নদী পাড়ের রাস্তাটির অবস্থাও একেবারে বেহাল। মীরগঞ্জ বাজারের প্রথম অংশ থেকে দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াত করছেন প্রতিনিয়ত। এছাড়া মাদ্রাসার সামন থেকে মীরগঞ্জ বাজারের সম্মুখভাগ ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। তা ছাড়া শরীফগঞ্জে প্রতিটি রাস্তার ভেঙ্গে যেন চিহ্ন মুচে গেছে। শত শত মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বসন্তপুর-কটলীপাড়া রাস্তাটি যেন এখন কেবলই স্মৃতি। রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর তা আর মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, উপজেলার এলজিইডির আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত