নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ আগস্ট, ২০১৭ ০১:৪১

রাগীব আলীর মনোনীত অধ্যক্ষে শিক্ষার্থী-চিকিৎসকদের আপত্তি, বিক্ষোভ-হট্টগোল

জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ

সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজে নতুন অধ্যক্ষের দায়িত্বগ্রহণ নিয়ে বৃহস্পতিবার ব্যাপক হট্টগোল হয়। শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকের বাধা ও বিক্ষোভের কারণে দায়িত্ব না নিয়েই ফিরে আসতে হয় রাগীব আলীর মনেনানীত অধ্যক্ষকে। এনিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে কলেজ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

মেডিকেল কলেজ প্রশাসন জানায়, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে রাগীব আলী মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষকে অধ্যক্ষ নিযুক্ত করেন। পরবর্তী সময় রাগীব আলী জেলে থাকা অবস্থায় আকস্মিকভাবে অধ্যক্ষ এ টি এম এ জলিলকে অপসারণ করা হয়। তখন থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন মো. আবেদ হোসেন। গত ১৮ জুলাই পরিচালনা পর্ষদের সর্বশেষ জরুরি সভায় আবেদ হোসেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তে কারাবন্দী রাগীব আলী ক্ষুব্ধ হন।

বৃহস্পতিবার রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারী রাগীব আলীর ভাতিজা আবদুল হান্নান নতুন একজন অধ্যক্ষকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মেডিকেল কলেজে যান। নতুন অধ্যক্ষকে রাগীব আলী নিযুক্ত করেছেন বলে জানালে শিক্ষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যান। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা কলেজের ক্লাস ও হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ করে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে নতুন অধ্যক্ষকে নিয়ে আবদুল হান্নান সমঝোতা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে নতুন অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত হলে আবদুল হান্নান ফিরে যান। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবেদ হোসেন বলেন, বিষয়টি অভ্যন্তরীণ ছিল। তাই এ নিয়ে কথা বলার মতো কিছু হয়নি।

বিক্ষোভ পরিস্থিতির মুখে কলেজ ও হাসপাতালে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুলিশ মোতায়েন করা ছিল বলে জানিয়েছেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, উত্তপ্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ চাওয়া হয়েছিল। অবশ্য পুলিশ হাসপাতাল এলাকায় অবস্থানকালে কোনো ধরনের অঘটন ঘটেনি।

উল্লেখ্য,  নগরীর পাঠানটুলা এলাকার দেবোত্তর সম্পত্তির তারাপুর চা-বাগান দখল ও সরকারি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় রাগীব আলীর নামে পৃথক দুটি মামলা হলে তিনি পালিয়ে ভারতে যান। ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর ভারতের করিমগঞ্জ অভিবাসন পুলিশের হাতে আটক হন রাগীব আলী। এরপর থেকে তিনি কারাবন্দী। গত ২ ফেব্রুয়ারি জালিয়াতির মামলার রায়ে এবং ৬ এপ্রিল সরকারের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় তাঁর ১৪ বছরের কারাদণ্ড হয়।

তারাপুর চা-বাগানে রাগীব আলী তাঁর স্ত্রী রাবেয়া চৌধুরীর নাম যুক্ত করে ১৯৯৫ সালে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের নামে এটি পরিচালিত হচ্ছে। এই স্থাপনাও বাগান এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত