নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:১৪

‘অমরত্ব চাই না, কবিতায় বাঁচতে চাই’

‘আমি অমরত্ব চাই না, কবিতায় বাঁচতে চাই’- বললেন কবি নৃপেন্দ্রলাল দাশ। বললেন- ‘গান গাইতে হলেও তবলা বাজানোর জন্য আরও একজন লোকের প্রয়োজন হয়। কিন্তু কবির জন্য কারো সাহায্যের প্রয়োজন নেই। কবি সয়ম্ভূ।

৬৯ পেরিয়ে ৭০-এ পা দিয়েছেন কবি নৃপেন্দ্রলাল দাশ। তাঁর সৃষ্টিশীল যাপিত জীবন নিয়ে সোমবার আয়োজন করা হয় ‘সাহিত্য-সুহৃদ সম্মিলন’-এর। এই সম্মেলনেই অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে এমনটি বলেন নৃপেন্দলাল।

মদনমোহন কলেজ সাহিত্য পরিষদের সহযোগীতায় কবি নৃপেন্দ্রলাল দাশ ৭০ বর্ষ উদযাপন পর্ষদ আয়োজনে এই অনানুষ্ঠানিক আয়োজনে নগরের শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ ও কবিসুহৃদরা তাকে নিয়ে আড্ডায় মেতে উঠেন। কবির জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান এবং সৃজনশীল দীর্ঘায়ু কামনা করেন।  

সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে কবি নৃপেন্দ্রলাল দাশ আরো বলেন, মানুষ অন্য কোন পেশায় না গিয়ে কবিতা লেখে তার কারণ লেখালেখির মাধ্যমে নিজেকে সম্রাট রূপে পাওয়া যায়। এখানে কোন নির্দেশনা বা ভোটের প্রয়োজন হয় না। একান্ত নিজের কথা কলমের কালিতে ফুটিয়ে তুলাই একজন কবির কাজ। একজন কবি তাঁর কবিতায় নিজের ভাব প্রকাশ করতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, নিজেকে সন্তুষ্ট করার জন্য কবির যে পরীক্ষা তা সীতার অগ্নী পরিক্ষারচেয়েও কঠিন। নিজের লেখায় কবির নিজের অসন্তোষ থেকেই কবিকে বার বার কবিতা লিখার তাড়না দেয়। আমি আমার মনের তাড়না থেকেই কবিতা লেখি। আমি যেন আমরন লেখালেখির সাথে থাকতে পারি আপনারা এই আর্শীবাদ করবেন।

মদন মোহন কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে আয়োজিত এই সুহৃদ সম্মেলনের শুরুতেই কবিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সাহিত্য পরিষদ সিলেট, বৃন্দস্বর, অভিমত সাহিত্য পত্রিকা, মদন মোহন কলেজ সাহিত্য পরিষদ, মঈন উদ্দিন আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন।

কবি নৃপেন্দ্রলাল দাশ ৭০ বর্ষ উদযাপন পর্ষদের আহবায়ক মদন মোহন কলেজ এর অধ্যক্ষ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ’র সভাপতিত্বে একই কলেজের শিক্ষক উজ্জল দাশের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কবি নৃপেন্দ্রলাল দাশ ৭০ বর্ষ উদযাপন পর্ষদের সদস্য সচিব অপূর্ব শর্মা। বক্তব্য রাখেন কবি নৃপেন্দ্রলাল দাশের সহধর্মিনী মমতা দাশ।

এরআগে কবিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত অভিমত ব্যক্ত করেন কবি অনুরাগী ও সুহৃদগণ। তাদের মধ্যে রয়েছেন- প্রকাশনা সংস্থা প্রতœপাঠের পরিচালক  মাহবুবা পারভীন, সাংবাদিক আল-আজাদ, কবি এ কে শেরাম, কবি এনায়েত হাসান মানিক, রবীন্দ্রগবেষক  মিহিরকান্তি চৌধুরী, অধ্যাপক তাপশী চক্রবর্তী, অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আসমা উল হোসনা, প্রকৌশলী মনুজ বিকাশ দেবরায়, অধ্যাপক পার্থসারথী নাগ, ডক্টর জফির সেতু, গীতিকবি শামসুল আলম সেলিম, নাট্যজন অরিন্দম দত্ত, কবি মোহাম্মদ হোসাইন,  কবি পুলিন রায়, কবি মাশুক ইবনে আনিস, নাট্যপরিষদ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত, কবি হোসনে আরা কামালী, কবি সুপ্রিয় ব্যানার্জী শান্ত, কবি আবিদ ফায়সাল, কবি আজির হাসিব, কবি মালেকুল হক, সাংবাদিক দেবাশীষ দেবু, সাংবাদিক জাবেদুর রশীদ, সুধাংশু রঞ্জন দাশ, মলয়কান্তি রায়, মাধব রায়, অনুজকান্তি দাশ, এখলাছুর রহমান, মুনশি আলিম, খালেদ উদদীন।
অনুষ্ঠানের বিভিন্ন অংশে কবির লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন মদন মোহন কলেজের শিক্ষক হোসনে আরা কামালী, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন ও নাট্যকর্মী মাধব কর্মকার।

কবি-গবেষক অধ্যাপক নৃপেন্দ্রলাল দাশ ১৯৪৯ সালের এই দিনে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ২ নং ভূনবীর ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম দেবেন্দ্রনাথ দাশ, মায়ের নাম লাবণ্য দাশ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ এম এ পাস করেন। এপর্যন্ত তাঁর মোট  ৮৫টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কবিতা দিয়ে লেখালেখি শুরু করলেও সাহিত্য, কাব্যনাট্য ও গদ্য রচনা করেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত