নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ নভেম্বর, ২০১৭ ১৮:৫৫

এবার ফুটপাত দখলদারদের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি

নানা ইস্যুতে ঘন ঘন পরিবহন ধর্মঘট ডাকার কারণে সমালোচিত সিলেট বিভাগ সড়ক পরিবহন মালিক- শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আবার ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে। এবার নগরীর ফুটপাত দখলদারদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ ৬ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার দুপুরে কদমতলী বাস টার্মিনালে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তাঁরা। ‌'হকার শ্রমিক'দের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ছাড়াও পরিবহন শ্রমিক নেতাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধসহ ৬ দফা দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে। দাবি না মানলে ১০ ডিসেম্বর থেকে সিলেট বিভাগে পরিবহণ ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে তাঁরা।

নগরীর ফুটপাত অবৈধভাবে দখল করা ও দখলদারদের আশ্রয় প্রদানের অভিযোগে গত ১৯ অক্টোবর ২৬ জনের বিরুদ্ধে সিআর মামলা নথিভুক্ত করেন আদালত। এরপর এদের বিরুদ্ধে পরোয়ানাও জারি করেন আদালত। মামলায় হকার্স নেতারা ছাড়াও অবৈধভাবে সড়ক দখল করে অটোরিকশা স্ট্যান্ড গড়ে তোলা পরিবহন শ্রমিক নেতাদের আসামী করা হয়।

গত ২৬ নভেম্বর এই মামলার প্রধান আসামী মহানগর হকার্স লীগ ও মহানগর হকার্স কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি রকিব আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদারের কবলে থাকা নগরীর ফুটপাত দখলমুক্ত করতে আদালতের এই উদ্যোগে নগরবাসী সস্তি প্রকাশ করলেও এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে সিলেট বিভাগ সড়ক পরিবহন মালিক- শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বিক্ষোভ সমাবেশে সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা 'ফুটপাত দখলদার'দের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঐক্য পরিষদের বিভাগীয় সভাপতি সেলিম আহমেদ ফলিকসহ বিভিন্ন জেলা ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা যুবলীগ ও শ্রমিকলীগ নামধারী একটি মহল কৌশলে পরিবহন শ্রমিকদের ঐক্যে ভাঙ্গন ধরাতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে সন্ধ্যায় সেলিম আহমদ ফলিক সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফুটপাত দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলার ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এই মামলায় আমাদের অনেক পরিবহন শ্রমিক নেতাদেরও আসামী করা হয়েছে। আমরা তো আর ফুটপাত দখল করি না। তাই পরিবহন শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি আমরা।

উল্লেখ্য, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ মে ফুটপাত দখলকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে সিলেট সিটি মেয়রকে নির্দেশ দেন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। এ ক্ষেত্রে মেয়রকে সহযোগিতার জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকেও নির্দেশ দেন আদালত।

আদালতের নির্দেশে ১৬ অক্টোবর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতোয়ালি থানার ওসি গৌছুল হোসেন ফুটপাত দখলকারীদের আশ্রয়দাতা হিসেবে ৩৮ জনের তালিকা আদালতে জমা দেন। সেই তালিকা অসম্পূর্ণ হওয়ায় ১৯ অক্টোবর ২৬ জনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা আদালতে জমা দেন কতোয়ালি থানার ওসি। ওইদিনই মূখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো এই ২৬ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।

হকার্স লীগ নেতা রকিব আলী ছাড়াও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় মহানগর হকার্স কল্যাণ সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি আতিয়ার রহমান, শফিক আহমদ, আবুল বাশার, রুহুল আমিন রুবেল, মখলেসুর রহমান, আব্দুল আহাদ, সাধারণ সম্পাদক খোকন ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রুমন আহমদ, জিন্দাবাজার অটোরিকশা স্ট্যান্ডের আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ইসলাম উদ্দিন, শফিক উদ্দিন, সদস্য সচিব ইউসুফ আলী, মধুবন পয়েন্ট ইমা/লেগুনা স্ট্যান্ডের সভাপতি সোহাগ মিয়া, সহ-সভাপতি মো. আদিল, সম্পাদক মো. কবির মিয়া, অর্থ সম্পাদক মো. বাবুল মিয়া, রংমহল টাওয়ার অটোরিকশা/সিএনজি স্ট্যান্ডের সভাপতি আজমল হোসেন, সহ-সভাপতি মুরাদ হোসেন, ধোপাদিঘির পাড় ইমা/লেগুনা স্ট্যান্ডের সভাপতি সাহাবউদ্দিন সাবু, সহ-সভাপতি ফয়জুল মিয়া, কার্যকরী সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর নুর হিরণ, কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ ও অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন আম্বরখানা-সালুটিকর শাখার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য তেরা মিয়ার বিরুদ্ধে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত