সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ মে, ২০১৮ ২০:১৮

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহালের দাবি

সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

কানাইঘাটে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন ও জোরপূর্বক ভূমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপি নেতা ফখর উদ্দিনের নেতৃত্বে আশ্রয় কেন্দ্র ও বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে হারিছ চৌধুরী একাডেমি নামে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

বুধবার (৯ মে) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কানাইঘাট উপজেলার ১নং লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির কান্দলা (আহমদ নগর) গ্রামের মরহুম হাজী নুরুদ্দিনের স্ত্রী মোছাম্মৎ আনোয়ারা বেগম।

লিখিত বক্তব্যে আনোয়ারা বেগম বলেন, ১৯৯৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার কানাইঘাটের কান্দলা মৌজায় প্রতিষ্ঠা করে বেগম ফজিলাতুন নেছা বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠানের জন্য আমার স্বামী নূরুদ্দিন এবং গ্রামের আরেকজন ব্যক্তি ভূমি দান করেন। আমার স্বামীর দান করা ভূমি নিয়ে আমার কিংবা আমার পরিবারের কোনো আপত্তি ছিল না এখনো নেই। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রভাবশালী নেতা হারিছ চৌধুরীর নামে এই বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মুলাগুল হারিছ চৌধুরী একাডেমি নামে নামকরণ করা হয়। হারিছ চৌধুরী সেই সময়ে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় আমরা বা গ্রামের কেউ প্রতিবাদ করতে পারিনি। শুধু নাম পরিবর্তন নয় করে থেমে থাকেনি কান্দলা মৌজার সাবেক ১২৮ এবং বর্তমান ৭৩ নং দাগে আমার স্বামীর মালিকানাধীন ১৮ শতক ভূমি ভুয়া দলিল সৃষ্টি করে একাডেমির নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়াও ৭২ নং দাগে এলাকার আব্দুল বারীর মালিকানাধীন ৭ শতক ভূমি একাডেমির নামে মৌখিক খরিদা দেখিয়ে জোরপূর্বক দখল করা হয়েছে। এ দাগে আমিসহ মোট ৯ জনের মালিকানাধীন আরো ৮ শতক ভূমি দখলের অপচেষ্টা করা হলে তা প্রতিহত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে একাডেমির নাম ভাঙ্গিয়ে তারা মোট ২৫ শতক ভূমি জোরপূর্বক দখলে রেখেছে। এসব ঘটনার অন্যতম নায়ক একাডেমির পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি বিএনপি নেতা ফখর উদ্দিন। তিনি ফজিলাতুন নেছা বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের আকৃতি পরিবর্তন করে সেখানে শ্রেণিকক্ষ তৈরি করেছেন। বেগম ফজিলাতুন নেছার মত মহিয়সী নারীর নাম পরিবর্তন করার দু:সাহস দেখিয়েছে ফখর উদ্দিন এবং তার সহযোগীরা। ফখর উদ্দিনের অন্যতম সহযোগী হচ্ছেন বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক জামায়াত নেতা আজিজুল ইসলাম। বিএনপি-জামায়াতের কিছু নেতাকর্মী মিলে এ চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে।

আনোয়ারা বেগম আরো বলেন, হারিছ চৌধুরী একাডেমি প্রতিষ্ঠার সময় আমার দ্বিতীয় পুত্র তৎকালীন সময়ের ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ আহমদ সুলেমানকে তারা ভুল বুঝিয়ে বিভিন্ন সময়ে একাডেমির কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করেছে। তাদের কারসাজি বুঝতে পেরে আমার পুত্র সুলেমান একাডেমির কার্যক্রম থেকে নিজেকে দূরে রাখে। আমার কনিষ্ঠ পুত্র মো. আব্দুল্লাহ ৭ মে আদালতে আমাদের ভূমিটুকু উদ্ধার ও এ সকল ভূমিখেকো, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলা করেছে। এ মামলার অন্যতম আসামি মৃত তৈমুছ আলীর পুত্র আজির উদ্দিনের বিরুদ্ধে সরকারি জায়গা আত্মসাতের দায়ে সরকার বাদী মামলাসহ অসংখ্য মামলা রয়েছ। এ মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছে, মৃত ফয়জুল বারীর পুত্র সফর উদ্দিন, মৃত নজির উদ্দিনের পুত্র আব্দুল বাসিত, মুহিবুর রহমান জনুর পুত্র সোহেল, মৃত গোলাম রব্বানীর পুত্র ফখর উদ্দিন ফখরু, মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র আব্দুল কুদ্দুছ, বাজেখেল গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র ফয়েজ আহমদ ও কবির উদ্দিন এবং ফয়েজের আহমদের পুত্র সোহেল মিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলানতুন নেছা বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহাল এবং অবৈধভাবে হারিছ চৌধুরী একাডেমির নামে আত্মসাতকৃত তাদের ভূমি উদ্ধারে উর্ধ্বতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কানাইঘাট উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, কানাইঘাট ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও কানাইঘাট মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল সিরাজুল ইসলাম. এপেক্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন সেবুল, সিলেট মহানগর কৃষক লীগের সহসভাপতি তৌফিকুল আলম বাবলু, কানাইঘাট পৌর কৃষক লীগের সভাপতি জুবায়ের আহমদ, এলাকার বিশিষ্ট মুরবিব আব্দুল কুদ্দুছ, হাফিজ মারুফ আহমদ, সাদ্দাম হোসেন, আহমদ আব্দুল্লাহ, জাহাঙ্গীর আলম বাবলু প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত