নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ মে, ২০১৮ ১৫:২৭

অনন্ত হত্যা: চার্জগঠনের তারিখ ফের পেছালো

বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার তিন বছর পর এই হত্যা মামলার চার্জগঠনের তারিখ আবারো পিছিয়েছে। আগামী ৩০ জুন অভিযোগ গঠনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সেই সাথে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানান মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মফুর আলী।

সোমবার (১৪ মে) সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালত এই তারিখ নির্ধারণ করেন।

পিপি মফুর আলী জানান, অভিযোগ গঠনের তারিখ ধার্যের মধ্য দিয়ে অনন্ত হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে,  ৯ মে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে ছয়জনকে অভিযুক্ত করে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক ইদ্রিসসহ ১০ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

অভিযুক্ত ছয়জন হলেন, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এবি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪), কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) ও সিলেট নগরীর রিকাবী বাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০)।  অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে আবুল, ফয়সাল ও হারুন পলাতক রয়েছেন।

গত বছরের ২০ জুন আদালত পলাতক তিনজনের সম্পদ ক্রোক করার নির্দেশ দেন। পরে ১৬ জুলাই অভিযোগ গঠনের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। এরপর ২৮ আগস্ট পাঁচজনকে আসামি করে এবং ১১ জনকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে অনন্ত হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপর ১৮ অক্টোবর শুনানি শেষে আদালত পুনরায় তদন্ত শেষে সম্পূরক চার্জশিট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এরই মধ্যে আসামী পক্ষের আইনজীবী সাফিউর রহমান ফারাবীর জামিন আবেদন করেন। তবে আদালত জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। পরে অভিযোগ গঠনে নতুন তারিখ ধার্য হয় আজ সোমবার।

এর আগে সিলেটের সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ জানান, সোমবার অভিযোগ গঠন হলে মামলার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে।

অনন্ত হত্যার ৩ বছর স্মরণে সিলেট সহ বিভিন্ন স্থানে নানান কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। সিলেটে গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে ১২ মে সন্ধায় আলোক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে অনন্ত হত্যার তিনবছরেও বিচার শুরু না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিলেট গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠকরা। একই সঙ্গে এই হত্যাকান্ডের বিচার দ্রুত সম্পন্নের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারে নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি যুক্তি নামে বিজ্ঞান বিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের একদিন পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত