জাহাঙ্গীর আলম খায়ের, বিশ্বনাথ

১২ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯ ০০:১৯

কাজ শুরুর আগেই মেয়াদ শেষ!

৫ কোটি টাকার বিশ্বনাথ উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প

কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিলো ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। আর শেষ হওয়ার কথা ২০১৮সালের ৩০জুন। অথচ মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ কাজ শুরুই হয়নি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক সম্প্রসারিত ভবন ও হলরুম নির্মাণ কাজের।

প্রায় ৫কোটি ৪২লাখ ১৫হাজার ৭৫টাকার ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য কন্ট্রাক্ট মতে ৪কোটি ৬৫ লাখ ৭হাজার ২শ’ টাকা ব্যয় ধরা হয়। কিন্তু মেয়াদকালের দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাসে কাজ শেষ হওয়াতো দূরের কথা, হল রুম নির্মাণ কাজ শুরুই হয়নি! আইনি জটিলতায় হল রুম নির্মানের জায়গায় আম, জাম, রেইন্ট্রি, মেহগনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় ২২টি গাছও অপসারণ করা হয়নি। অপরদিকে গাছ অপসারণ কিংবা অন্য কোন জটিলতা না থাকলেও আটকে আছে প্রশাসনিক সম্প্রসারিত ভবনের নির্মাণ কাজ।

সম্প্রসারিত ভবনের ভিটেতে কোনমতে লিন্ডার টেনে এক কোটি টাকা বিল তোলে নিয়ে নির্মাণ কাজও বন্ধ করে দিয়েছেন সিংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। ফলে বিশ্বনাথের প্রশাসনিক ভবন ও হল রুম নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
 
বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ একেএম মনোওর আলী, উপজেলা সুজনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইদুর রহমান সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক মধু মিয়া নির্মাণ কাজের এই বিলম্বের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী, সাইট ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারের সমন্ময়হীনতা এবং তাদের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন। তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, গাছ তো কেবল অজুহাত মাত্র। আসলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা আর ঠিকাদার নিজেরা নিজেদের ফায়দা হাসিলে ব্যস্ত থাকায় হল রুমের কাজ শুরু হয়নি আর প্রশাসনিক ভবনের কাজও আটকে আছে।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক সম্প্রসারিত ভবন ও হল রুম নির্মাণের জন্য প্রায় সাড়ে ৫কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এজন্য ২০১৬ সালের শেষের দিকে পুরনো হল রুমটি ভেঙে দেওয়া হয়। স্থানান্তরিত করা হয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারমান, কৃষি অফিস, বিআরডিবি অফিসসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তর। কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী ৪কোটি ৬৫লাখ ৭হাজার ২শ’ টাকা ব্যয় ধরে নির্মাণ কাজের টেন্ডার পান সিলেটের ‘মেসার্স আক্তার ট্রেডার্স’র মালিক জামাল আহমদ চৌধুরী। ২০১৭ সালের ২১অক্টোবর ওই উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি ও স্থানীয় সাবেক এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স আক্তার ট্রেডার্স’র মালিক জামাল আহমদ চৌধুরী ও তার ম্যানেজার মাকসুদ আহমদের সঙ্গে বার বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে, সিলেটের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেছে, সরকার নির্ধারিত মূল্য না পাওয়ায় গাছগুলো তিনবার টেন্ডারের পরও বিক্রি করা যায়নি।

প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দায়ী নন দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার ও উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, গাছ না কাটা আর ঠিকাদারের অসহযোগীতার কারণে নির্মাণ কাজ আটকে আছে। এলজিইডি মন্ত্রনালয়ের প্রকল্প পরিচালক বরাবরে লিখিত দেওয়া হয়েছে নির্দেশনা পেলে কাজ শুরু করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত