সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১০ মার্চ, ২০১৯ ১২:৩০

শাল্লা ও ধর্মপাশার তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সুনামগঞ্জের দুটি উপজেলার তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে শাল্লা উপজেলার একটি ও ধর্মপাশা উপজেলার দুটি কেন্দ্র রয়েছে।

রোববার (১০ মার্চ) সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগে এ সকল কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।

কেন্দ্রগুলো হচ্ছে শাল্লা উপজেলার কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ধর্মপাশা উপজেলার দুগনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সরিষাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

শাল্লা উপজেলার কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকেরা। সেখানে নৌকা প্রতীকে আল আমিন চৌধুরী এবং আনারস প্রতীকে অবনীল মোহন দাস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অভিযোগ ওঠে, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নৌকার সমর্থকেরা ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাতে বাধা দেন আনারস প্রতীকের সমর্থকেরা। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। সকাল সাড়ে নয়টার পর থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।

একই উপজেলার দামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে ভোট দিতে না দেওয়ার অভিযোগ করেন।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের দুগনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ভোট গ্রহণ বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী শামীম আহমেদ মুরাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন রোকন—এই দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের বারান্দার খানিকটা সামনে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে থাকা দুই পক্ষের এজেন্টরাও এতে জড়িয়ে পড়েন। এ অবস্থায় ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বেলা পৌনে ১১টার দিকে ধর্মপাশা উপজেলার সরিষাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট পেপার নিয়ে কয়েকজন ভোটারের টানাটানির ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।

সুনামগঞ্জের রিটার্নিং কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগে ধর্মপাশা ও শাল্লা উপজেলার তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করার কথা নিশ্চিত করেছেন।

এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৭ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৫ জন প্রার্থীসহ ১৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

৯টি উপজেলার ১৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা রয়েছে। তাদের মধ্যে মহিলা ৬ লাখ ৮১ হাজার ৪৪৮ জন ও পুরুষ ভোটার ৬ লাখ ৮২ হাজার ২২২ জন।

এসব উপজেলার ৩১৮টি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ২২৩টি সাধারণ কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসারসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়। নির্বাচন পরিচালনার জন্য মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স, জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত, জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসের নেতৃত্বে তদারকি টিম মাঠে কাজ করছে।

উল্লেখ্য, জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে শুক্রবার জামালগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া জগন্নাথপুর উপজেলায় গেলবার পুনর্নির্বাচন হওয়ায় এখানে এ মেয়াদে কোনও নির্বাচন হচ্ছে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত