দীর্ঘ ২৫ বছর পর দখলমুক্ত হয়েছিলো সিলেটের দুই হাজার কোটি টাকা মূল্যের দেবোত্তোর সম্পত্তি তারাপুর চা বাগান। বিতর্কিত শিল্পপতি রাগীব আলীর দখল থেকে আদালতের নির্দেশে সেবায়েত পংকজ গুপ্তকে ২০১৬ সালে বুঝিয়ে দেওয়া হয় ৪২২ একর আয়তনের এই চা বাগান।

তবে এখনও আলোচিত এই চা ভ’মি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বিভিন্ন গোষ্টি। সম্প্রতি তারাপুরের ‘দুসকি’ ও ‘মোহাম্মদপুর’ এলাকায় চা ভূমি দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি স্থাপনা। ভূমি দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালী গোষ্টি টিলার উপর ও পাদদেশে কাঁচা ও আধাপাকা এসব স্থাপনা নির্মাণ করে বলে জানান বাগানের সেবায়েত পংকজ গুপ্ত। স্থাপনা নির্মাণ ধ্বংস করা হয়েছে চা বাগান।

রোববার এসব স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় সিলেট সদর উপজেলা প্রশাসন। অভিযানে গুড়িয়ে দেওয়া হয় বাগান দখল করে নির্মিত ১১টি স্থাপনা ধ্বংস করা হয়। উচ্ছেদকৃত স্থাপনার মধ্যে ছিল পাকা, আধা পাকা, কাঁচা ও টিন শেড ঘরবাড়ি।

অভিযানে ১১ টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও বাগানের ভেতর আরও বেশ শতাধিক স্থাপনা রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন পংকজ গুপ্ত।

তবে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই এলাকায় অন্যান্য অবৈধ দখলদার যারা পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন, মানবিক বিবেচনায় তাদের বাড়িঘর না ভেঙ্গে সময় দেওয়া হয়েছে। তাদের অতিসত্ত্বর বাগান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
 
রোববার বেলা ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোজিনা আক্তারের নেতৃত্বে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এতে ইউনিয়ন পরিষদ ভূমি কর্মকর্তা মুকুল চন্দ্র দাশসহ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরা অংশ নেন।
     
এ ব্যাপারে সিলেট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোজিনা আক্তার বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এই বাগানে নতুন করে কোনো স্থাপনা তৈরি হবে না। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা অমান্য করার কারণে সম্প্রতি বাগানের জমিতে বেশকয়েকটি স্থাপনা গড়ে উঠেছে। সেগুলো উচ্ছেদে আমরা অভিযান শুরু করেছি। আজ  (রোববার) ১১টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এই অভিযান আরও কয়েকদিন চলবে।

প্রসঙ্গত, ২৫ বছর পর ২০১৬ সালের ১৫ মে শিল্পপতি রাগিব আলীর দখল দেবোত্তর সম্পত্তি সিলেটের তারাপুর চা-বাগান উদ্ধার করে সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন। এরআগের আগের বছর বাগানটি সেবায়েতকে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। একইসঙ্গে সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করে বাগানটি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ারও নির্দেশ দেন আদালত।