রিপন দে, মৌলভীবাজার

০৩ জানুয়ারি, ২০২০ ২০:১৬

ভরা মৌসুমেও পর্যটক শূন্য মৌলভীবাজার

সারা বছর পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারে পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও শীত মৌসুমে তা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। শীতকেই ধরা হয় পর্যটনের ভরা মৌসুম। তবে চলতি মৌসুমে মৌলভীবাজারে পর্যটকের সংখ্যা কমেগেছে আশংকাজনক হারে। ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে অন্যান্য বছর জেলার প্রতিটি হোটেল-রিসোর্ট পরিপূর্ণ থাকলেও এ বছর ছিল ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। পর্যটন মৌসুমে পর্যটক কমে যাওয়ায় চিন্তিত এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে যায় যায়, পর্যটন মৌসুমে মৌলভীবাজারে সব চেয়ে বেশী পর্যটক দেখা যায় কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেইক, হামহাম জলপ্রপাত, মনিপুরী পাড়ায় এবং শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন চাবাগান ও বাইক্কাবিল, কুলাউড়ার কালাপাহাড়, হাকালুকি হাওর। এই পর্যটকদের ৯৫% থাকার জন্য বেছে নেন শ্রীমঙ্গলের প্রায় ৭০টি হোটেল রিসোর্টকে। এ সব হোটেল-রিসোর্ট প্রতি বছর নববর্ষের সময় কয়েক হাজার পর্যটক আগাম বুকিং দিয়ে রাখেন। কিন্তু এই বছর পর্যটকের সংখ্যা কমেগেছে ৮০ শতাংশ। ৭০ টি হোটেল রিসোর্টে গড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ছাড়া সব রুম খালি ছিল।  

শ্রীমঙ্গল শহরের গ্রীণলিফ রিসোর্টের পরিচালক এস কে দাস সুমন জানান, গত বছর তার রিসোর্টের ৯০ শতাংশ রুমে পর্যটক ছিলেন কিন্তু এই বছর তার ৮৫ শতাংশ রুম পর্যটন শূন্য ছিল। পর্যটন বান্ধব পরিবেশ না থাকায় পর্যটকরা বিদেশ মুখী হচ্ছেন বলে তার ধারণা।

পর্যটন সেবা সংস্থা শ্রীমঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক জানান, গত কয়েক বছর ধরে পর্যটক কমছে কিন্তু এই বছর তা আশংকাজনক হারে কমে এসেছে।

পর্যটক কমার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পর্যটকরা এখন বিদেশমুখী, খরচের অনুপাতে ভারত, থাইল্যান্ড বা বালিতে পর্যটকরা যে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে আমাদের এখানে তা পাচ্ছে না।  দেশে পর্যটনের ব্যপারে সরকার উদাসীন। পর্যটকদের জন্য নুন্যতম সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।  হাজার হাজার পর্যটক আসেন কিন্তু ভাল একটি পাবলিক টয়লেট নেই শ্রীমঙ্গলে।  আন্তঃনগর ট্রেনে নেই পর্যাপ্ত আসন। সেই সাথে আছে মাইকের বিকট শব্দ।  

অন্যদিকে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতেও একই চিত্র। অন্যান্য বছর গড়ে যে পর্যটকের সংখ্যা দেখা যায় এবছর তা নেই । এমনকি নববর্ষের দিনেও অনেকটাই পর্যটক শূন্য ছিল।

মাধবকুণ্ড পর্যটক সহায়ক ও উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান কবির জানান, নববর্ষে আগত পর্যটকদের সংখ্যায় প্রতি বছর বৃদ্ধি পায় কিন্তু এই বছর তা হয়নি। আমাদের ধারণা ছিল নববর্ষ উপলক্ষে মাধবকুণ্ডে ১৫ থেকে ২৫ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটবে।  সেখানে এবার হাজারখানেক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে যার বেশীরভাগ স্থানীয় পর্যটক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত