কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

০৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২০:৩৩

পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের উত্তর বলে দেয়ার অভিযোগ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে

চলমান মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কয়েকটি কেন্দ্রে বহিরাগতরা প্রবেশ করে পরীক্ষার্থীদের উত্তর বলে দিচ্ছেন, এমন অভিযোগ উঠেছে। মূলত উপজেলার এএটিএম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও  হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপর এ অভিযোগ উঠে।

এমনও অভিযোগ রয়েছে, বিষয়টি যাতে প্রকাশ না হয় সেজন্য কেন্দ্রে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রবেশে অঘোষিত বিধিনিষেধ রয়েছে। গতকাল শমশেরনগর এর দু’টি কেন্দ্র ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

মূলত বিদ্যালয়ে সুনাম বৃদ্ধি, জিপিএ ৫ ও ফলাফল ভালো দেখাতে শিক্ষার্থীদের আইসিকিউ ও গ্রামার শিখিয়ে দিতে এ ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান পরীক্ষার কেন্দ্রের দায়িত্বর অন্যান্য শিক্ষকরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চলতি এসএসসি পরীক্ষায় কমলগঞ্জ উপজেলা সদর, শমশেরনগর, মুন্সীবাজার ও আদমপুরে পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের এক একজন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। তবে বিদ্যালয়সমূহে ফলাফল ভালো ও জিপিএ-৫ বাড়ানোর জন্য কিছু কিছু কেন্দ্রে কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।

উপজেলার শমশেরনগরে হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও এএটিএম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে দু’টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পার্শ্ববর্তী এএটিএম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছে। অপরদিকে এএটিএম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাই স্ব স্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর তাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে ও হলসমূহে অবাধে প্রবেশ করছেন।

সংবাদ পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষার দিনে হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই প্রতিনিধিসহ দুইজন গণমাধ্যম কর্মী প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ সাংবাদিক প্রবেশে বাধা আছে বলে জানায়। পরে বাধা প্রত্যাহার করলে ভেতরে যাওয়ার পর এএটিএম বিদ্যালয়ের বাপ্পী নামের একজন শিক্ষককে হলরুমে সামনে দেখা যায়। পরবর্তীতে বেলা পৌনে ১২টায় এএটিএম বিদ্যালয়ে গেলেও দায়িত্বরত পুলিশ সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরও কেন্দ্রে যাওয়ার আপত্তি জানান।

নাম প্রকাশ না করার সর্তে বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানান, এই দুই প্রতিষ্ঠানের ফলাফল ভালো করানোর জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানরা পূর্ব থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে পরীক্ষা শুরু হলে এএটিএম স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক ও হাজী মো. উস্তওয়ারের কয়েকজন শিক্ষক এএটিএম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। পরে প্রতিটি কক্ষে গিয়ে তারা তাদের ছাত্রদের আইসিকিউ ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসেন। ইতিপূর্বেও এই দু’টি কেন্দ্রে এভাবে অনিয়ম হয়েছে বলে শিক্ষকরা দাবি করেন।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, উপজেলায় একটি সভা থাকায় আমি ব্যস্ত ছিলাম। তবে এধরণের খবর পেয়ে সাথে সাথে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। তবে আগামী পরীক্ষায় তিনি নিজে তদারকি করবেন বলে জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত