নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ মার্চ, ২০২০ ১৪:১০

ফার্মেসির সামনে নিরাপদ দূরত্বের চিহ্ন

নগরীর ব্যস্ততম এলাকা সোবহানীঘাট পয়েন্ট। আশেপাশে ৪-৫টি বেসরকারি হাসপাতাল থাকায় রোগীদের আনাগোনা একটু বেশিই লক্ষ্য করা যায় এ এলাকা দিয়ে। সেই সাথে বেশ কয়েকটি ফার্মেসিরও দেখা মিলে এখানে। এরই মধ্যে একটি সোবহানীঘাট পয়েন্টে মেসার্স ফেমাস ফার্মেসি।

করোনাভাইরাস আতঙ্কে সারাদেশে প্রায় লকডাউন অবস্থা। জরুরি সেবা ছাড়া যখন সবকিছুই বন্ধ, ঠিক তখনই ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে আসা রোগী বা তাদের স্বজনদের সুবিধার্থে ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়ানোর জন্য ৩ ফুট অন্তর অন্তর গোল চিহ্নিত বৃত্ত আকা হয়েছে ফার্মেসির সামনে। এমন সচেতন কাজের উদ্যোক্তা ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী পিকলু দে।

শনিবার (২৮ মার্চ) সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, ক্রেতাগণ যাতে নির্ধারিত দূরত্বের বৃত্তের মধ্যে দাড়িয়ে অপেক্ষমাণ থেকে ওষুধ ক্রয় করতে পারেন এবং যাতে জটলা সৃষ্টি না হয় এজন্য ক্রেতা ও আমাদের বিক্রেতাদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে আমার দোকানের সামনে ৫টি বৃত্ত অঙ্কন করেছি।

তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন দেশে বা আমাদের দেশেরও কয়েকটি জায়গায় হাটবাজার বা মুদি দোকানে এরকম গোল চিহ্নে দাড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করতে দেখি মানুষজনকে। তাই আমিও চিন্তা করলাম এরকম যদি আমাদের ফার্মেসিতেও করি এটা আরও ভালো ও নিরাপদ হবে আমাদের এবং ওষুধ কিনতে আসা ক্রেতাদের জন্য।

ফার্মেসির সামনে এরকম বৃত্ত আঁকা দেখে ওষুধ কিনতে আসা রূপক আহমদ এরকম উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে তাদের এই কাজটা দেখে ভালো লেগেছে। আমাদের সবার উচিত তাদের মতো সচেতন হওয়া।

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ হলেও ফার্মেসি, মুদি দোকান ও হাটবাজার খোলা আছে।

তাই নিজের এবং ফার্মেসির কর্মীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বলে জানান পিকলু।

তিনি জানান, দোকানে আসা ক্রেতারা সবাই রোগী বা রোগীর সংস্পর্শে থাকা মানুষ। তাই কার থেকে কোন রোগ সংক্রমিত হয় তা বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতিতে বলা যায় না।

যে সকল জরুরি পরিসেবা সারাদেশে চালু আছে তিনি সিলেটসহ সব জায়গায় এরকম সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য চিহ্ন অঙ্কন করা ও তা জনসাধারণকে মেনে চলার আহবান জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। এদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইউরোপের দুটি দেশ ইতালি ও স্পেনে। চীনের উহান থেকে সংক্রমণ শুরু হলেও তা এখন বিশ্বের ২০৩টি দেশ ও অঞ্চলে পৌঁছে গিয়ে ছয় লাখ ৬২ হাজার ৭৫১ জনকে আক্রান্ত করেছে বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এদের মধ্যে ১২০টি দেশ ও অঞ্চল থেকে মৃত্যুর খবর এসেছে বলে জানাচ্ছে তারা।

বাংলাদেশে মোট নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৫ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৮ জন, এবং পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়। তখন বলা হয়, এই তিনজনের মধ্যে দুজন ইতালি থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন; তাদের কাছ থেকে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত দেশে পাঁচজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গত ১৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত