শাকিলা ববি

০৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:৪১

সিলেটে বৃষ্টির অভাবে জমিতে ফাটল, ধানের বদলে চিটা

সিলেট সদর উপজেলার সামাউরাকান্দি গ্রামের কৃষক আব্দুল কাইয়ুম। তিনিসহ ৫ ভাই মিলে কৃষি কাজ করেন। সামাউরাকান্দি হাওরে নিজেদের ৪ বিঘা জমি আছে। পাশাপাশি আরেকজনের ৫ বিঘা জমিতেও বোরো ধান লাগিয়েছেন তারা। ধান গাছে ইতোমধ্যে থোড় এসে গেছে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ার কারণে জমিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ধান গাছের গোড়াতে পানি নেই তাই ধান পুষ্ট হচ্ছে না। ধানে দেখা দিয়েছে চিটা। গাছ ভালো হলেও এবার বৃষ্টির পানির অভাবে ধানে চিটা দেখা দেওয়ার আশংকা করছেন কৃষক আব্দুল কাইয়ুম।

আব্দুল কাইয়ুম বলেন, এখন পর্যন্ত মেঘের কোনো খবর নাই। ইবার ধান খরায় নিব মনে হয়। ধানের গাছ ভাল হইলেও গরমে ধান চোঁচা (চিটা) হইতাছে। মেঘ না হইলে বেশিরভাগ ধান চোঁচা হই যাইবো। তিনি বলেন, ১২জন সদস্য আমার পরিবারে। এর মধ্যে আমরা ৫ ভাই মিলে কৃষি কাজ করি। এই ধান ই আমাদের সব চাষাবাদ করি। এই জমির ধান দিয়েই আমাদের পরিবারের চালে। আল্লায় মেঘ না দিলে এই গ্রামের সবাই সমস্যাত পরবো।

আব্দুল কাইয়ুমের মত বাওরকান্দি, বাদাঘাট, নীলগ্রাম, বাইশটিলা এলাকার কৃষকরা আশংকা করছেন ফসলহানির। খরার জন্য ধানের শীষের শাখা বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং ধান চিটা হয়ে যায়। তাই কৃষকরা এখন অপেক্ষা করছেন বৃষ্টির।

এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকারি অফিস ছুটি থাকায় মাঠে যাচ্ছেন না কৃষি কর্মকর্তারা। ধানে চিটার খবর জানেনও না সিলেট সদর উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকতারা। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর দিয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস। সিলেট আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, শুক্রবারে সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। মঙ্গলে এবং বুধবার বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ার সম্ভাবনা আছে।

সিলেট সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার সিলেট সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৫শ হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ২৮০০ হেক্টর জমি পড়েছে হাওড় এলাকায়।

সামাউরাকান্দির  কৃষক রফিকুল ইসলাম, মফিজ আলী বলেন, ইবারের বোরো ধান মনে হয় খরায় নিবো। এক ফোঁটা মেঘও নাই। সব ধান চোঁচা (চিটা) হইতেছে। বাওরকান্দির কৃষক ইসলাম উদ্দিন বলেন, ধানের অবস্থা ভালা নায়। মেঘ নাই। মেঘ না থাকায় ধান চোঁচা (চিটা) হই যার।

এ ব্যাপারে সিলেট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, এবার বোরো ধানের ফলন ভাল হয়েছে। তবে ধানের চিটার খবর জানা নেই। কারণ করোনাভাইরাসের জন্য মাঠ পর্যায়ে যাচ্ছেন না কৃষি সুপারভাইজাররা। তিনি বলেন, চিটা হয় ধান গাছের গোঁড়ায় পানি না থাকলে। প্রতিবছরই এই সময় কিছুটা বৃষ্টি হয়। কিন্তু এবার যেহেতু এখনো বৃষ্টি হচ্ছে না তাই ধানে চিটা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষার পাশাপাশি সেচ দিয়ে জমিতে পানি দিলে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত