মাধবপুর প্রতিনিধি

০৬ এপ্রিল, ২০২০ ১৭:২১

মাধবপুরে ফোনে মেয়েদের স্নানের ছবি ধারণের প্রতিবাদ করায় হামলা, গ্রেপ্তার ৩

হবিগঞ্জের মাধবপুরে মোবাইল ফোন দিয়ে  মেয়েদের স্নানের ছবি ধারন করার প্রতিবাদ করার ঘটনায় সংখ্যালঘদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ ৩ জন কে গ্রেপ্তার করেছে। রোববার বিকেলে  উপজেলার ছাতিয়াইন ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  

ঘটনার খবর পেয়ে রোববার রাতে হবিগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (মাধবপুর- চুনারুঘাট সার্কেল ) নাজিম উদ্দিন ও থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ ইকবাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রাতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার পুলিশ খেলু মিয়া (৫৫), রেহানা বেগম (৩৫) ও ফরিদা (৩৮) কে গ্রেপ্তার করা হয়।

মনিপুর গ্রামের অমল সরকারের স্ত্রী রানু রানি সরকার জানান, রোববার দুপুরে তার ননদ দশম শ্রেণীর ছাত্রী ও ভাসুরের মেয়ে সহ ৩ জন বাড়ির পাশে পুকুরে স্নান করতে যায়। এ সময় একই গ্রামের অনু মিয়ার ছেলে হুমায়ুন, মৃত শাহজাহান মিয়ার ছেলে শরিফ, আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে শাহাব উদ্দিন, মৃত সায়েদ মিয়ার ছেলে বায়েজিদ মিয়া তাদের মোবাইল ফোন দিয়ে মেয়েদের স্নান করার ছবি ধারণ করে।

মেয়েরা বাড়িতে এসে এ ঘটনা বললে হুমায়ুনসহ তাদের অভিভাবকদের বাড়িতে গিয়ে বিচার দেন রানি সরকারের ভাসুর। বিচার  দেওয়ায় ক্ষুব্দ হয়ে হুমায়ুন ও তাদের লোকজন বিকেল ৩ টার দিকে হিন্দু পাড়ায় গিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে। হুমায়ুন ও তার সঙ্গীরা রানু রানি সরকারে শিশু সন্তান কে পুকুরে ছুড়ে  ফেলে দেয়।

তাদের হামলায় মহাদেব সরকারের স্ত্রী দিপালি সরকার (৫৫), মহাদেব সরকারের ছেলে বিমল সরকার (২৮), অমল সরকার (২২) আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের প্রথমে মাধবপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কতৃব্যরত চিকিৎসক তাদের হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
 
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ মাধবপুর উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক রাজীব দেব রায় রাজু জানান, মনিপুর গ্রামে হিন্দু পাড়াতে হামলার ঘটনায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতারা খোঁজখবর নিচ্ছেন। পুলিশ ৩ জন কে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তার করা না হলে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান  ঐক্য পরিষদ নেতারা ঘরে বসে থাকবে না। প্রয়োজন মানববন্ধন সহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

মাধবপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) গোলাম দস্তগীর আহামেদ জানান, মনিপুর গ্রামের বাসুদেব সরকার বাদি হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করেছেন। ছাতিয়াইন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামরুল ইসলাম কে  মামলাটি তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ৩ জন কে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য জড়িদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত