ইয়াসীন সেলিম

২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ২২:৩৫

মেঘালয় বেষ্টনীতে সাদাপাথর ও নীলজল ধলাই সৌন্দর্যে

কবি নূরুল নাভেদ’র ৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

নদীর স্রোতের মতো সময়ের গতি বহে চলেছে। এ ধারায় সাংবাদিক নূরুল ইসলাম (কবি নূরুল নাভেদ) গত ৮ জানুয়ারি জীবনের ৫০তম বছর পাড়ি দিলেন। শেরপুর এলাকার সুহৃদ-শুভার্থীরা তার ৫০ বছর পূর্তিতে গত ২৩ জানুয়ারি চড়ুইভাতির আয়োজন করে।

’আমরা ক’জন’র ব্যানারে আনন্দ ভ্রমণে শামিল হোন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৩৪ সৃজনশীল ব্যক্তিবর্গ। ছুটির দিনে কুয়াশা ভেজা ভোরে শেরপুর থেকে সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর স্থল ভ্রমণে ছিল নান্দনিক আবহ। ফেরার পথে একই এলাকার বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের দৃষ্টিনন্দন প্রবেশ পথে কবির বর্ণাঢ্য জীবন বিষয়ক স্মৃতিচারণমূলক অনুভূতি প্রকাশ করেন সহযাত্রী অনেকে।

শিশিরাবৃত প্রকৃতি। হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে ‘আমরা ক’জন’ এর নিমন্ত্রিত অতিথিরা চড়–ইভাতির আনন্দে মেতে ওঠতে ওইদিন কাক ডাকা ভোরে সমবেত হোন মৌলভীবাজারের শেরপুর বাজারে। শেরপুর থেকে বাসযোগে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে যাত্রা শুর করা হয়। সিলেটের ভোলাগঞ্জ সীমান্তে সাদাপাথর স্পট মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। এ পাহাড় থেকে উৎপত্তি হওয়া ধলাই নদের বুকে জেগে ওঠা বালু আর পাথর বেষ্টিত চরাঞ্চলই সাদাপাথর খ্যাত পিকনিক স্পট। ভোলাগঞ্জ থেকে এ নয়নাভিরাম স্পটে যেতে মেঘাবরণে সবুজ পাহাড়ের রূপে মন্ত্রমুগ্ধ চোখ ধলাই নদের শীতল জলকেলিতে ভটভট আওয়াজে নৌকা চলছে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। অন্যদিকে অগভীর বরফগলা মতো ঠান্ডা নদজলে শরীর ডুবিয়ে শ্রমিকদের পাথর তোলার দৃশ্য চোখ এড়ায়নি কারো। মেঘালয়ের কোল ছেড়ে নেমে আসা ধলাই নদের বর্ণিল গতি পথের সাথে তাল মিলিয়ে সাদাপাথর স্থলের সৌন্দর্য অবিরাম আহবান করছে প্রকৃতিপ্রেমি মাত্রই। আমরা ক’জন’র প্রাণবন্ত উচ্ছল তারুণ্য প্রকৃতির আহবানে সাড়া দিতে কার্পণ্য করেনি। এ দিনকার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে পরতে পরতে সাজানো নানা দিক যেন ধলাইয়ের বহে চলা আর মেঘালয়ের বিলানো সৌন্দর্য ছোঁয়ায় আরও নান্দনিক হয়ে ওঠে।

মনোজ, জাহাঙ্গীর, ইয়াসীন সেলিমের সার্বিক তত্ত¡াবধানে চড়–ইভাতির আনন্দেযজ্ঞে যোগ দেন লক্ষ্যস্থিত ব্যক্তি সাংবাদিক, কবি নূরুল ইসলাম (নূরুল নাভেদ), নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল আলম, ব্যবসায়ী পূর্ণেন্দু পোদ্দার, শেরপুর আজাদ বখত উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক শিহাবুর রহমান, শিক্ষক আলাউদ্দিন, সাংবাদিক আব্দুস সামাদ আজাদ, ডিবিবিএল ব্যাংকে কর্মরত জাকারিয়া কবির, উদ্যোক্তা মিজানূর রহমান বাবলু, সিঙ্গারের শাখা ব্যবস্থাপক টিপু সুলতান, ওসমানীনগরের কবি বিলাল হোসেন।

আনন্দ ভ্রমণে সুর তরঙ্গে মাত করেন ছুরুক আলম, মামুন আহমদ, জামাল আহমেদ, বিধান রায়, কলেজ ছাত্রী নিশাত তাচ্ছুম, নুপুর, দেবাশীষ চৌধুরী প্রমুখ। তাদের গানে সুর মেলান সহযাত্রী সবে। কেউ কেউ গানের সাথে নৃত্যতালে শিল্পীবৃন্দকে উৎসাহের কসরতে অন্য রকম আবহ বিরাজ করে।

স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য পর্বের প্রাক্কালে কবির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মিষ্টিমুখ শেষে অনুভূতি প্রকাশ করেন যার তার মতো। এরপর শেরপুর শ্রীহট্ট সাহিত্য সংসদের পক্ষ থেকে কবিকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন যাদব সূত্রধর, নোমান সাদী, রুমান আহমদ মাছুম, লিটন দেব জয়, সৈয়দ আবদাল, জাকির হোসেন, রনি দেব, রুবাইৎ রোশান, রুহান প্রমুখ।

দিন শেষে গোধূলীলগ্নে বাড়ি ফেরার পালা। বাস চলে শেরপুরের পথে। ক্ষণিকের ব্যবধানে শেরপুরবাজারে পৌছে আনন্দযজ্ঞে মেতে থাকা সবে বাড়ি ফেরার মুহূর্তে সিঙ্গারের শেরপুর শাখার আরেক ম্যানেজার মারূফ এর চা আপ্যায়নের নিমন্ত্রণ। জার্নির জড়তা কাটানোর রসদ নিমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন স্বানন্দে চিত্তে উপস্থিত সকলে। গল্পে গল্পে চা পানপর্ব শেষে দিনের শুরুতে ঘটা মিলন মেলার ইতি ঘটে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত