নোয়াখালী প্রতিনিধি

০৮ জুন, ২০২০ ২২:১০

নোয়াখালীতে গৃহবধূ ‘গণধর্ষণে’ জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় এক গৃহবধূকে স্বামীর সামনে থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের অভিযোগে ওই নারী আজ শনিবার বিকেলে সাত জনের নামে মামলা করেন। কবিরহাট থানার পরিদর্শক ফজলুল কাদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন জেলা ‘যৌন হয়রানি নির্মূলীকরণ নেটওয়ার্ক’ এর নেতৃবৃন্দ। রোববার (৮ জুন) দুপুরে ব্র্যাক নোয়াখালীর ‘যৌন হয়রানি নির্মূলীকরণ নেটওয়ার্ক’ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ দাবি জানান তারা।

নেটওয়ার্ক নেতৃবৃন্দ জানান, গত (৩জুন) বুধবার বিকালে পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলা থেকে কবিরহাট উপজেলায় এক আত্মীয়ের বাড়ীতে জমি কিনতে আসেন গৃহবধূ (২১) ও তার স্বামী (২৫)। কাজ শেষ না হওয়ায় ওই আত্মীয়ের বাড়ীতে অবস্থান করেন তারা। রাতে স্থানীয় সমাজ কমিটির সভাপতি আব্দুস ছাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের নেতৃত্বে ৬-৭ জন ব্যক্তি গৃহবধূর আত্মীয়ের বাড়ীতে আসেন। এ সময় তারা ঘরে ঢুকে ওই দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক অবৈধ বলে তাদের বিয়ের কাগজ দেখতে চান। কিছু বুঝে উঠার আগেই গৃহবধূ ও তার স্বামীকে আটক করে বাড়ীর পাশের একটি জায়গায় নিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যান সমাজপতিরা।

বিজ্ঞাপন

রাত যখন গভীর তখন দম্পতিকে ছেড়ে দিতে তাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবী করেন আব্দুস ছাত্তার ও আবুল কালাম। পড়ে ওই গৃহবধূর স্বামী তার খালাতো ভাইকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানালে, তিনি পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা মুক্তিপণ হিসাবে ছাত্তারের হাতে দিয়ে আরও পঁচিশ হাজার টাকা পড়ে দিবেন মর্মে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন। টাকা নিয়ে ছাত্তার গৃহবধূকে নিরাপত্তা দিবেন বলে তার মেয়ের বাড়ীতে নিয়ে যান এবং তার স্বামী ও খালাতো ভাইকে পিঠিয়ে জখম করেন।

নির্যাতিত গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, ছাত্তার রাতে তার মেয়ের বাড়ী থেকে গৃহবধূকে তার স্বামীর কাছে পৌঁছে দেয়ার নামে বাড়ী থেকে বের করে নিয়ে ফাঁকা রাস্তায় ৫-৬ জন লোকের হাতে ছেড়ে দেন। এ সময় গৃহবধূ তাদের কাছ থেকে বাঁচতে ছাত্তারকে বাবা ডেকেও রক্ষা পাননি। পরে তারা রাস্তার পাশের^ একটি কলাবাগানে নিয়ে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যান।

গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় ব্র্যাক ‘যৌন হয়রানি নির্মূলীকরণ নেটওয়ার্ক’ নোয়াখালী এর আহ্বায়ক মো. আবুল কাসেম, যুগ্ম-আহবায়ক এবিএম আবদুল আলীমসহ সকল নেটওয়ার্ক সদস্যবৃন্দ এক যুক্ত বিবৃতিতে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একইসাথে নেটওয়ার্ক প্রতিনিধিবৃন্দ ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত