নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ জুলাই, ২০২০ ০২:৪৫

নেত্রকোনায় মারামারিতে আহত কিশোরের মৃত্যু

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় মাদ্রাসায় শিক্ষকের চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটে একই এলাকার তিন কিশোরের। এ সময় ছয়জন মাদ্রাসার ছাত্র সোলেমান নামের এক কিশোরকে বেধড়ক মারধর করে। ঘটনার একদিন পর আশংকাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার (১২ জুলাই) সন্ধ্যার পর সে মারা যায়।

এরআগে শনিবার (১১ জুলাই) দুপুরের দিকে মেঘশিমূল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মারামারির এ ঘটনা ঘটে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোলেমান তার বন্ধুদের নিয়ে শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মাদ্রাসার পাশে ঘুরতে যায়। এ সময় সোলেমান মাদ্রাসার একটি চেয়ারে বসে। এর প্রতিবাদ জানায় মাদ্রাসার কিছু ছাত্ররা। এরই জের ধরে মাদ্রাসার ছাত্ররা সোলেমানকে বেধড়কভাবে বাশ দিয়ে মারধর করে। তবে তৎক্ষণাত তার কোন রক্তক্ষরণ হয়নি। বাড়িতে ফিরেও বিকেল পর্যন্ত অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছিল সে। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকেই তার শরীর খারাপ করতে থাকে। শুরু হয় অনবরত বমি। সারা রাত বমি করতে করতে নিথর হয়ে যাচ্ছিল তার দেহ। সেই সাথে খিচুনিও ওঠে। একই সাথে শুরু হয় অসংলগ্ন কথাবার্তা বলা।

পরিবারের লোকজন প্রথমে বিষয়টি এতো গুরুত্ব না দিলেও পরে অবস্থা বেগতিক দেখে সকালে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখানে অবস্থা খারাপ দেখে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়। দুপুরের দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে তাকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান। তাকে বাঁচাতে হলে এখনই অপারেশন করতে হবে বলে জানান ডাক্তার। তাই তারা ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।


এরপর পরিবারের লোকেরা তাকে নিয়ে ঢাকার পথে রওয়ানা দেন। ঢাকার টঙ্গীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পৌছামাত্রই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সোলেমান।

 
মারা যাওয়া শাহ মোহাম্মদ সোলেমান হক (১৩) নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মেঘশিমূল গ্রামের শাহ মোহাম্মদ এনামুল হকের ছেলে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার লাশ বাড়িতে এনে রাত ১টার দিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এ ঘটনায় থানায় মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে নিহত সোলেমানের পরিবার।

পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাচ্চাদের দুই পক্ষের মারামারিতে একজন গুরুতর আহত হলে তাকে প্রথমে পূর্বধলা ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

তবে এই ঘটনায় রাত ১২টা কোনো পর্যন্ত মামলা দায়ের করা হয়নি বলে জানিয়েছেসি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত