নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ জুলাই, ২০২০ ২১:৩৭

সোলেমান নিহতের ঘটনায় ৫ জনকে আসামি করে মামলা, গ্রেপ্তার ১

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় মারামারিতে এক কিশোর নিহতের ঘটনায় ৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) মামলার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান।

তিনি বলেন, আজ মঙ্গলবার সোলেমানের বাবা শাহ মোহাম্মদ এনামুল হক বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

গ্রেপ্তারকৃত ১৪ বছরের কিশোর মেঘশিমুল হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। সে উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মেঘশিমুল বিশ্বাসপাড়া গ্রামের মো. ছালাম বিশ্বাসের ছেলে।

নিহত শাহ মোহাম্মদ সোলেমান হক (১৩) নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মেঘশিমুল গ্রামের শাহ মোহাম্মদ এনামুল হকের ছেলে।

নিহতের চাচা কামাল হক জানান, ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার রাতে সোলেমানের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছে।

এর আগে ১২ জুলাই রোববার মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে একই এলাকার তিন কিশোরের। এ সময় কয়েকজন মাদ্রাসার ছাত্র সোলেমানকে বেধড়কভাবে মারধর করে। ঘটনার একদিন পর ১৩ জুলাই তাকে আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার সন্ধ্যায় মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোলেমান তার বন্ধুদের নিয়ে শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মেঘশিমুল গ্রামের মাদ্রাসার পাশে ঘুরতে যায়। এ সময় সোলেমান মাদ্রাসার একটি চেয়ারে বসে। এর প্রতিবাদ জানায় মাদ্রাসার কিছু ছাত্ররা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে মাদ্রাসার ছাত্ররা সোলেমানকে বেধড়কভাবে বাঁশ দিয়ে মারধর করে। তবে তৎক্ষণাৎ তার কোন রক্তক্ষরণ হয়নি। বাড়িতে ফিরেও বিকেল পর্যন্ত অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছিল সে। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকেই তার শরীর খারাপ করতে থাকে। শুরু হয় অনবরত বমি। সারা রাত বমি করতে করতে নিথর হয়ে যাচ্ছিল তার দেহ। সেই সাথে খিঁচুনিও ওঠে। একই সাথে শুরু হয় অসংলগ্ন কথাবার্তা বলা।

পরিবারের লোকজন প্রথমে বিষয়টি এতো গুরুত্ব না দিলেও পরে অবস্থা বেগতিক দেখে সকালে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখানে অবস্থা খারাপ দেখে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়। দুপুরের দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে তাকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান। তাকে বাঁচাতে হলে এখনই অপারেশন করতে হবে বলে জানান ডাক্তার। তাই তারা ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর পরিবারের লোকেরা তাকে নিয়ে ঢাকার পথে রওয়ানা দেন। ঢাকার টঙ্গীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পৌঁছামাত্রই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সোলেমান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত