সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ অক্টোবর, ২০২১ ২০:১৮

৬ মাদ্রাসাছাত্রের চুল কেটে নিলেন শিক্ষক

লক্ষ্মীপুরে একটি মাদ্রাসায় ছয়জন ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির। তিনি ওই এলাকার একটি ইউনিয়নের জামায়াতে ইসলামীর আমির বলে জানা গেছে।

জেলার রায়পুর উপজেলার হামছাদী কাজির দিঘীরপাড় আলিম মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ৬ ছাত্রের চুল কেটে দিয়ে জেলাব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার শিকার ওই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির। এঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

জানা যায়, গত বুধবার ক্লাস চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে। পরে তারা ক্লাস না করেই মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এতে ছাত্র ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মাদ্রাসার দাখিল শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও ফজলে রাব্বীসহ কয়েকজন জানায়, গত বুধবার তাদের ইংরেজি ক্লাস চলছিল। এ সময় হঠাৎ করে সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির স্যার কাঁচি (কেঁচি) দিয়ে আমাদের ৬ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেয়। এ ঘটনার পর ছাত্ররা ক্লাস না করে বেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে মাদ্রাসাটির অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ছাত্ররা তাদের ক্লাস শেষ করে।

এক ছাত্র জানায়, ইংরেজি ক্লাসের প্রথম ঘণ্টা পড়ার পর হঠাৎ করে মঞ্জুরুল স্যার আমাদের (ক) শাখার ক্লাসে ঢুকে ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেন।

মঞ্জুরুল কবির এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি দাখিল শ্রেণির সকল ছাত্রকে পরীক্ষার আগের দিন চুল কেটে মাদ্রাসায় আসতে বলেছি। ছাত্ররা আমার কথার অবাধ্য হওয়ার কারণে কয়েক ছাত্রের চুল কেটে দিয়েছি। আমি ওদেরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে থাকা ও নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই চুল কেটে দিয়েছি।

বামনী ইউপি চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন মুন্সী বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির হওয়ায় প্রায় সময় ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। তার ভয়ে ছাত্রতো দূরের কথা অন্য শিক্ষকরাও নিরুপায় বলে আমি জানি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি সত্যতা পাওয়া যায় তা হলে বিধি মোতাবেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বালাগাত উল্যাহ বলেন, এ ঘটনায় আগে কোনো শিক্ষার্থী অভিযোগ করেনি। খোঁজখবর নিয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলাবোধ সৃষ্টির জন্য অনেক সময় ছাত্রদের একটু ভয় দেখানো হয়। তবে কোনো শিক্ষক ছাত্রদের চুল কাটতে পারেন না।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল বলেন, ‘পুলিশ শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত