সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ মার্চ, ২০২৪ ০০:১২

কান্তজিউ মন্দির অঙ্গনে মসজিদ পুনর্নির্মাণ আপাতত বন্ধ

ছবি : সংগৃহীত

দিনাজপুর কাহারোল উপজেলায় কান্তজিউ মন্দির অঙ্গনে মসজিদ পুনর্নির্মাণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার অবসান হয়েছে। দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাকিল আহমেদ।

রোববার (২৪ মার্চ) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিসি শাকিল আহমেদ জানান, ১৩ মার্চ রাজ দেবোত্তর এস্টেটের এজেন্ট রনজিৎ কুমার সিংহ এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘সকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নিয়ে কান্তনগর এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে মসজিদ কমিটির সঙ্গে কথা হয়েছে। রাজ দেবোত্তর এস্টেট কমিটির সঙ্গেও সভা করেছি। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে– আপাতত সেখানে কোনো নির্মাণকাজ হবে না। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত মসজিদ পুনর্নির্মাণকাজ বন্ধ থাকবে। যেহেতু জায়গাটি রাজ দেবোত্তর এস্টেটের, এখানে কোনো কিছু নির্মাণ করতে হলে অনুমতি লাগবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবাশীশ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহাগ চন্দ্র সাহা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নুরে এ আলম ও কাহারোল ইউএনও আমিনুল ইসলাম।

জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের এজেন্ট রনজিৎ কুমার সিংহ উল্লেখ করেন, কাহারোল উপজেলার কান্তনগর মৌজায় সি এস ২ নম্বর খতিয়ানটি শ্রী শ্রী কান্তজিউ বিগ্রহ সেবাইত অনারেবল মহাজার জগদিশ নাথ রায় নামে প্রচারিত। ওই খতিয়ানে ৯৪.৭ একর ও এস এ ৫ নম্বর খতিয়ানে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের পক্ষে জিম্মাদার জেলা প্রশাসক ১৯টি দাগে ৬২.৪৬ একর জমি রয়েছে। ১৪৩০ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত খাজনা হালনাগাদ রয়েছে। ১০ মার্চ জানতে পারেন– কান্তনগর মৌজার ৫ ও ১৬ নম্বর দাগের রাজ দেবোত্তর এস্টেটের সম্পত্তির ওপর একটি পাকা মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে। এটা শুনে ১১ মার্চ তিনি জায়গাটি পরিদর্শন করেন। রাজ দেবোত্তর এস্টেটের সম্পত্তিতে মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু করায় এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে কাজ বন্ধ করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করছি।

এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, ‘এখানে আগে থেকেই সেমি-কাঁচা মসজিদঘর ছিল। এখন ২৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলে তিন তলার ভিত্তিপ্রস্তরের মসজিদ ঘর পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। ১ মার্চ কাজের উদ্বোধন করেন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য জাকারিয়া জাকা।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জায়গাটি নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছিল। সে সময় আদালতের আদেশে উভয় পক্ষকে আপস করে নেওয়ার জন্য বলা হয়। সেই সূত্রে ১৯৭৬ সালের ১৩ জুন একটি আপসনামা মূলে ৮ শতক জমির মালিক মসজিদ।

দিনাজপুর জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রতন সিং বলেন, ‘মসজিদ পুনর্নির্মাণের ব্যাপারে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের এজেন্ট জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগ দেওয়ার পর সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত