সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ মে, ২০১৬ ০৩:১৯

পানামা পেপার্স : ১৮ বাংলাদেশির অর্থের উৎস সন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংক

পানামা পেপার্সের নথিতে উল্লেখিত বাংলাদেশিদের মধ্যে ১৮ জনের অর্থের অনুসন্ধান শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পানামা পেপার্স নথি প্রকাশের পর সারাবিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়।

রোববার (১৫ মে) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়।

কমিটির সভাপতি ড. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, আবদুল ওয়াদুদ, টিপু মুন্সি, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও আখতার জাহান।

বৈঠক শেষে ড. আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কমিটিকে জানানো হয়েছে যে, তারা পানামা পেপার্সের নথি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। কমিটি এ বিষয়ে পরের বৈঠকে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককেও তাদের অনুসন্ধানের প্রতিবেদন কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য বলা হয়েছে।

দি ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিং জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) ফাঁস করা পানামা পেপারসে বিশ্বের নামীদামী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তারকাসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নাম রয়েছে। বলা হচ্ছে, দেশের বাইরে নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠান খুলে এসব ব্যক্তি অর্থ পাচার বা কর ফাঁকি দিয়েছেন। এই তালিকায় বাংলাদেশিদের অনেকের নাম এলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ১৮ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

এদিকে, এ ছাড়া রিজার্ভের খোয়া যাওয়া অর্থের মধ্যে ফিলিপাইন থেকে আরও ১৬ মিলিয়ন ডলার ফেরত পাওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে বলেও কমিটিকে জানানো হয়েছে।

বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ইতিমধ্যে ফেরত পাওয়া গেছে এবং আরও প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলার ফেরত পাওয়ার আশ্বাস মিলেছে। বাকি অর্থ ফেরত পেতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কমিটি চুরির জন্য দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করে অর্থ ফেরত আনার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বৈদেশিক মুদ্রায় পরিচালিত অফশোর ব্যাংকিংয়ের সার্বিক ঝুঁকি হ্রাস এবং তুলনামূলকভাবে মুক্ত ও সহজ অফশোর ব্যাংকিং সুবিধার সার্বিক সুফল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা সময়োপযোগী করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগ নিয়েছে।

এবি ব্যাংককে কমিটিতে তলবের সিদ্ধান্ত:
এদিকে আরব বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, পরের বৈঠকেই তাদের উপস্থিত থাকতে বলা হবে।

এই ব্যাংকটির বিরুদ্ধে অফশোর ইউনিট থেকে চার বিদেশি কোম্পানির নামে চার কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ৩৪০ কোটি) পাচার করা হয়েছে। এই অর্থ পাচার হয়েছে সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংযুক্ত আরব আমিরাতের গ্লোবাল এমই জেনারেল ট্রেডিং ও সেমাট সিটি জেনারেল ট্রেডিং, সিঙ্গাপুরের এটিজেড কমিউনিকেশনস পিটিই লিমিটেড ও ইউরোকারস হোল্ডিংস পিটিই লিমিটেড। এ ঋণের অন্যতম সুবিধাভোগী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক মোটরস। তিনি এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত