সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ জুলাই, ২০১৭ ১৫:২৪

নওয়াজ শরিফের পদত্যাগ

পানামা পেপার্স মামলার রায়ে পদে থাকার অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার পর পদত্যাগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।

দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের অভিযোগ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের পর সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ শুক্রবার সর্বসম্মত এক রায়ে নওয়াজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার অযোগ্য ঘোষণা করে। এর কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের কথা জানানো হয় বলে দেশটির ইংরেজি দৈনিক ডনের খবর।

এনিয়ে তৃতীয়বারের মত ক্ষমতা ছাড়তে হলো নওয়াজ শরিফকে। এরআগে দুইবার তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। এরআগে ১৯৯০ ও ১৯৯৯ সালে দুই বার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেও ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় কোনোবারই তিনি মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। দ্বিতীয়বার সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশান্তরিত হয়েছিলে নওয়াজ। তখন বেশিরভাগ সময় তিনি থাকতেন সৌদি আরবে। ২০১৩ সালের নির্বাচনে ফের ক্ষমতায় আসেন তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারকেও দায়িত্বে থাকার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে। নওয়াজ পরিবারের সাবেক হিসাব রক্ষক ইসহাক ছিলেন পাকিস্তানের মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী সদস্য। আদালতের নির্দেশে তিনিই নওয়াজের পরিবারের সম্পদের তথ্য ও নথি আদালতে উপস্থাপন করেছিলেন।

ডন লিখেছে, এ যাবতকালে পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রীই পুরো মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সরকার চালিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব কার ওপর বর্তাবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

গত বছর ফাঁস হওয়া পানামা পেপারসে নওয়াজ শরীফের মেয়ে মরিয়ম ও ছেলে হাসান-হুসেনের নাম আসে। তারা তিনজন ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত বিভিন্ন অফশোর কোম্পানির নামে লন্ডনে সম্পত্তি কেনেন বলে ফাঁস হওয়া নথিতে জানা যায়। এরপরই বিরোধীরা নওয়াজ পরিবারের সম্পত্তির হিসাব ও দুর্নীতির তদন্ত করতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে দাবি জানায়।

গত জুনে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট জানায়, পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে অপসারণ করার মত পর্যাপ্ত প্রমাণ মেলেনি। নওয়াজ পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে আদালত একটি যৌথ দল গঠনের নির্দেশ দেয় সে সময়।

সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দা সদস্যদের নিয়ে গঠিত ছয় সদস্যের এ তদন্ত দলকে নওয়াজ পরিবারের তিন পুরুষের সম্পত্তির হিসাব নিতে বলা হয়; একইসঙ্গে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

নওয়াজ শরীফ ও তার সন্তানরা শুরু থেকেই তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। পরিবারের সব সম্পত্তিই বৈধ উপায়ে কেনা বলেও তাদের দাবি। যৌথ তদন্ত দলের (জেআইটি) জিজ্ঞাসাবাদেরও প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও তার সন্তানরা একই কথা বলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত