সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ জুলাই, ২০১৬ ২০:৩৫

জেএসসি পরীক্ষার্থীকে পেটালেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক!

কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী এক ছাত্রকে ডেকে এনে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহাম্মেদ ওই ছাত্রকে তাঁর কার্যালয়ে আটকে রেখে বেধড়ক পেটান বলে অভিযোগ করেছেন মেহেরাজ হোসেন রিফাত নামের এই ছাত্র।

রিফাতের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর সামছুদ্দিন গ্রামে। গত বছর সে উপজেলার মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষা দেয়। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে রিফাত।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত আজ (শনিবার) দুপুরে সাংবাদিকদের জানায়, গত বছরের জেএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র বিষয়ের পরীক্ষার উত্তরপত্র কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে যাওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়। সম্প্রতি স্বশরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য তাকে চিঠি দেয় কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। গত ২৭ জুলাই নিজের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলমকে নিয়ে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে যায় সে।

রিফাত জানায়, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহাম্মেদ উত্তরপত্রে লেখার গরমিলের বিষয়ে জানতে চান। সে জানায়, তার এক সহপাঠী তা লিখে দিয়েছে। ওই উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে উত্তেজিত হয়ে যান কায়সার আহাম্মেদ। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক নুরুল আলমকে ওই কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে লাথি, ঘুষি মারতে থাকেন কায়সারসহ আরো পাঁচ-ছয়জন।

আহত রিফাতকে প্রথমে লক্ষ্মীপুর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও পরে আজ শনিবার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম জানান, উত্তরপত্রের লেখা সম্পর্কে জানতে চাইলে রিফাত জানায়, তার এক সহপাঠী ওই উত্তরপত্রে লিখেছে। এরপর কায়সার আহাম্মেদ বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে রিফাতকে মারধর করেন।   

রিফাতের মা পারভীন আক্তার জানান, রিফাতকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক জখমের চিহ্ন আছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পারভীন আক্তার। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আনোয়ার হোসেন জানান, রিফাতের শরীরে আঘাতের একাধিক চিহ্ন আছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল এলে জখমের বিস্তারিত বলা যাবে।

এ ব্যাপারে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহাম্মেদ জানান, ওই ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়। গত ২৭ জুলাই কয়েকজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সবার শেষে মেহেরাজ হোসেন রিফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। উত্তরপত্রে লেখার বিষয়ে প্রথমে রিফাত এক সহপাঠীর কথা জানায়। পরে সুমন নামে এক শিক্ষকের কথা বলে।

এদিকে আহত রিফাতকে হাসপাতালে দেখতে এসেছিলেন কমলনগর থানার হাজিরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, ‘ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি আমরা। এ কারণে হাসপাতালে আহত ছাত্রকে দেখতে এসেছি। পরে তদন্তকাজ শুরু করব আমরা।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত