সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ আগস্ট, ২০১৬ ১৬:৩৫

যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মাদ্রাসাশিক্ষক গ্রেপ্তার

দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি নেদায়ে ইসলাম মহিলা মাদ্রাসার এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার বিকেলে মাদ্রাসাশিক্ষককের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রী থানায় অভিযোগ দায়েরের পর রাত আটটায় পুলিশ ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার বেলা একটায় চাঁদপুর বিচারিক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে তাঁকে চাঁদপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃত মাদ্রাসাশিক্ষক মো. আল-আমিন সরকার (৩৮) গণিত বিভাগের প্রভাষক। তিনি ওই মাদ্রাসার একটি শ্রেণিকক্ষে প্রতিদিন সকাল-বিকেলে ব্যাচ করে ছাত্রীদের কোচিং করাতেন। মাদ্রাসাসংলগ্ন এতিমখানার একটি কক্ষে থাকতেন তিনি। দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীও প্রতিদিন সেখানে তাঁর কাছে পড়তে যেত। মাদ্রাসাশিক্ষক মো. আল-আমিন সরকারের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সরাইলকান্দি গ্রামে।

গত মঙ্গলবার সকাল আটটায় ওই ছাত্রী  কোচিং করতে মাদ্রাসাশিক্ষক আল-আমিনের কাছে যান। কোচিং শেষে অন্য ছাত্রীরা চলে গেলেও আল-আমিন ওই ছাত্রীকে কৌশলে সেখানে কিছুক্ষণ আটকে রেখে যৌন নিপীড়ন করেন বলে এজাহার সূত্রে জানা গেছে। লজ্জা-ক্ষোভে ওই ছাত্রী পরে মাদ্রাসায় ক্লাস না করেই সেখান থেকে বাড়ি চলে যায়। গত শনিবার পর্যন্ত সে মাদ্রাসায় যায়নি।

সূত্র জানায়, শনিবার রাতে ওই ছাত্রী বিষয়টি তার বড় ভাই ও মা-বাবাকে জানায়। গতকাল বেলা ১১টায় সে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের কাছে শিক্ষক আল-আমিনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ করে। পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে সে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা করে। গতকাল রাত আটটায় মাদ্রাসা এলাকা থেকে পুলিশ ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে।

ছাত্রীর বড় ভাই সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় তাঁর পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ মো. শহিদ উল্যাহ সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্তে মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক আহমদ উল্যাহকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষককে আপাতত ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের সভা ডেকে তাঁর বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগের ব্যাপারে মো. আল-আমিন সরকার বলেন, ঘটনার জন্য তিনি লজ্জিত এবং দুঃখিত। ভবিষ্যতে আর কখনো এমন করবেন না।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন মজুমদার বলেন, ছাত্রীর দায়ের করা মামলায় ওই শিক্ষককে গতকাল রাত আটটায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা একটায় চাঁদপুর বিচারিক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে তাঁকে চাঁদপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত