সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২১:২৬

প্রকল্পে ‘গ্রামীণ’ নাম থাকলে সরকারি অনুমোদন পাওয়া যায় না : ইউনুস

"কোনো প্রকল্পে ‘গ্রামীণ’ নাম থাকলে তার সরকারি অনুমোদন সহজে পাওয়া যায় না। সরকারের অনুমোদন পেতে আমাদের বড় কষ্ট হয়। এখানে কেউ ‘গ্রামীণ’ নাম দেখলেই আর এটাতে হাত দিতে চায় না। অনুমতির জন্য আমরা আটকে থাকি। কাউকে অভিযোগও করতে পারে না। ”

ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের ১৮০ বছর পূর্তির তিন দিনব্যাপী উৎসবের দ্বিতীয় দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব‌্য দেন গ্রামীণ ব‌্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব‌্যবস্থাপনা পরিচালক ড। মুহাম্মদ ইউনূস।

এসময় তিনি সামাজিক ব্যবসার আওতায় চট্টগ্রামে একটি নার্সিং কলেজ করার আগ্রহের কথাও জানান।

ইউনূস বলেন, কয়েক দশক আগে গ্রামীণ ব্যাংক সংক্রান্ত আইন করতে গিয়ে সরকারের সঙ্গে সমস‌্যা শুরু হয়ে এখনও তা চলছে। শুরু হলো ১৯৭৬ সালে, ১৯৮৩ সালে এটাকে ব্যাংকে রূপান্তর করলাম। নাম দিলাম গ্রামীণ ব্যাংক। আইডিয়া হল মালিক হবে সদস্যরা। এটা ব্যবসায়িক ভিত্তিতে চলবে। লাভের টাকা ঋণগ্রহীতাদের কাছেই ফিরে যাবে। বাইরের কেউ পাবে না। আইন করতে যখন গেলাম মন্ত্রণালয় থেকে বলা হল, এভাবে তো পারবেন না। সরকারকে কিছু শেয়ার দিতে হবে। এই পড়লাম বিপদে। ওই যে বিপদে পড়লাম, বিপদ থেকে এখনও মুক্ত হইনি। সেই চক্কর এখনও চলতেছে।”

ব‌্যাংকের মালিকানা এবং কর্তৃত্ব নিয়েই এই সংকট জানিয়ে এর জন‌্য সরকারকে দায়ী করেন মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, “আমি বললাম যে, ঠিক আছে- ৫ শতাংশ দিই, ১০ শতাংশ দিই। তারা যখন আইন বানালো ৭৫ ভাগ মালিকানা সরকারের, ২৫ ভাগ মালিকানা সদস্যদের। আমি বললাম, এটা তো হবে না। চাচ্ছিলাম- পুরোপুরি গরীবের মালিকানায় হবে। বহু দর কষাকষির পরে এ আইন সংশোধন করা হল। সংশোধন করে পাল্টানো হল- ৭৫ ভাগ সদস্যদের, ২৫ ভাগ সরকারের। খুশি হলাম, মালিকানা সদস্যদের কাছে আসল"।

সামাজিক ব্যবসা নিয়ে ইউনূস বলেন, “এটা হলো একটা ব্যবসা, ব্যবসা এই অর্থে যে তার টাকা আদায় হয়। অথচ কাউকে নিজের পয়সায় করতে হচ্ছে না। এবং এই টাকা কারো লাভের জন্য যাচ্ছে না, শুধু খরচ মেটানো যাচ্ছে। সেই কনসেপ্টটাই হলো সোশ্যাল বিজনেস। ইংরেজিতে যেটা বলি- এটা হলো নন ডিভিডেন্ট কম্পানি ফর সলভিং আ সোশ্যাল প্রবলেম। কাউকে ব্যক্তিগত কোনো মুনাফা দেয় না। সামাজিক সমস্যার সমাধানের জন্য এটা করা, আর কিচ্ছুর জন্য নয়।”

চট্টগ্রাম কলেজিয়েটসের সভাপতি ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন‌্যদের মধ‌্যে ১৮০ বছর পূর্তি ও পূনর্মিলন উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী এবং সদস্য সচিব মোস্তাক হোসাইন বক্তব‌্য দেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত