বেনাপোল প্রতিনিধি

০৬ মার্চ, ২০১৭ ১৩:৩৩

স্ত্রীর মর্যাদা আদায়ে লড়ছেন দিপামনি

স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে টানা ৩ মাস স্বামীর বাড়িতে অনশন করে তা না পেয়ে দিপামনি নামে এক তরুণী এখন নিজের দাবি নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

দিপামনি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার চাঁদকাঠি বাজার গ্রামের দিলীপ বিশ্বাসের মেয়ে। যশোরের বেনাপোলের পাঠবাড়ি গ্রামের দিপামনির স্বামী বিপ্লব কুমার বিশ্বাস তাকে বিয়ের পর কয়েক ধাপে বড় বড় অংকের যৌতুক নিয়ে পরে বিভিন্ন অজুহাতে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দিপামনি।

দিপামনি অভিযোগ করে বলেন, হিন্দু শাস্ত্র মতে মন্ত্র পড়ে পুরোহিতের মাধ্যমে বেনাপোলের পাঠবাড়ি গ্রামের নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে বিপ্লব কুমারের সাথে তার গত বছরের ১৫ মে বিয়ে হয়। একই বছরের ২২ মে তারিখে নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে সশরীরে উভয়ে হাজির হয়ে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। এরপর থেকে তারা স্বামী-স্ত্রী রূপে সংসার করে আসছেন।

সংসার যাপনের এক পর্যায়ে দিপামনির বাবার কাছে যৌতুক দাবি করেন স্বামী বিপ্লব। দিপামনির বাবা নগদ এবং বিকাশের মাধ্যমে মেয়ের জামাই বিপ্লবকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং সাথে ১ ভরি ওজনের সোনার চেইন ও আট আনা ওজনের একটি আংটি প্রদান করেন। এছাড়া বিয়ের আগে দিপামনি তার খুলনাস্থ এবি ব্যাংকের নিজের একাউন্ট থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলে স্বামীকে দেন।

এরপর বিপ্লব তার স্ত্রীর নিকট গত বছরের ৪ নভেম্বর পুনরায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করলে দিপামনি সে টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিপ্লব স্ত্রীর কানের দুল এবং গলার চেইন কেড়ে নিয়ে মারধর করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। 

দিপামনির উপর চালানো নির্যাতন আড়াল করার জন্য বিপ্লব যশোরের আদালতে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে দিপামনির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার বেনাপোল পোর্ট থানার দায়িত্বে পড়ে। বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই হাবিবুর রহমান তদন্ত শেষে ( স্মারক নং-২৭৪ তারখি ৪/০২/১৭ ) বিপ্লব তার স্ত্রীর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করার সত্যতা পান। তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে পাওয়া যায়, তাদের বিয়ের সত্যতা রয়েছে এবং উভয়ে ঘর-সংসার করেছেন। স্বামী বিপ্লব যে মামলা দায়ের করেছেন, তা ভিত্তিহীন বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়।

এরপরও যখন বিপ্লব দিপামনিকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তার নামে অশ্লীল এবং কুরুচিপুর্ণ কথা বলে বেড়াতে থাকেন, তখন দিপামনী যশোর বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন (যৌতুক নিরোধ আইনের ধারা- ৪, তারিখ ১০/০২/১৭)।

দিপামনি অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী সংসারে কোন কাজ-কর্ম করেন না। তিনি একজন মাদকসেবী। টাকা ফুরিয়ে গেলেই তার কাছে টাকা চেয়ে বারবার যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।

এ ব্যাপারে পাটবাড়ি গ্রামের বিপ্লবের মায়ের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু বউ বাড়িতে থাকাকালীন ছেলে বাড়িতে প্রবেশ করে না। ছেলে না আসলে আমার কি করার আছে বলেন?

আপনার মন্তব্য

আলোচিত