সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ এপ্রিল, ২০১৭ ১৪:১৩

টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে দুর্গত হাওরবাসীর পাশে দাঁড়ালো দরিদ্র শিশুরা

পরিবারে অভাব-অনটনকে সঙ্গী করে বেড়ে উঠছে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার খুকনী গ্রামের দরিদ্র তাঁত শ্রমিক আজাদ হোসেনের স্কুল পড়ুয়া ছেলে আপন হোসেন (৯)। দারিদ্র্যতা তার নিত্যসঙ্গী। ঠিকঠাক জুটে না স্কুলের পোশাক, খাতা-কলমের, এমনকি তিন বেলার খাবারো। অভাবের কষ্ট বোঝা সেই আপন এগিয়ে এসেছে হাওরের দুর্গত মানুষের সহায়তায়।

সুনামগঞ্জে হাওরের কৃষকদের ফসলহানির কথা গণমাধ্যমে জানতে পেরে ব্যথিত হয় আপন। নিজের কাছে থাকা ২০ টাকা হাতে নিয়ে মুখোমুখি হয় সহপাঠীদের। তাদের সাথে পরামর্শ করে, কিভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো যায়।

এক সময় তারা খবর পায়, হাওরের সবকিছু খোয়ানো মানুষের পাশে দাঁড়াতে ঢাকার কয়েকজন সংবাদকর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন। সে কথা এলাকার অন্যান্য শিশুদের জানায় আপন ও তার সহপাঠীরা। এরপর বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এলাকার তাঁত শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও নাপিতের স্কুল পড়ুয়া সন্তান মোরসালিন, সাগর শীল, রিজন, আশিক, রিফাত, রাব্বি হোসেন, সিয়াম, জুবায়েল, রিপন সহ আশপাশের স্কুলে লেখা-পড়া করা ১৫ জন বন্ধু এক হয়ে চলে বৈঠক। সেখানে  নিজেদের টিফিনের টাকা এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে ১০, ২০, ৪০, ৫০ টাকা করে তুলে হয় ৩৪০ টাকার তহবিল। পরে ঐদিন রাতে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর মাধ্যমে হাওরবাসীকে সহায়তার উদ্যোক্তা সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার কাছে সেই তহবিল পৌঁছে দেয় তারা।

শিশুরা জানায়, আমরা সংবাদ মাধ্যমে ফসলহারা হাওরের মানুষের আর্তনাদ দেখে ব্যথিত। যতটুকু পেরেছি, তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি।

সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না জানান, হাওরের অভাবী মানুষের জন্য অসহায় শিশুদের নিষ্পাপ বুকের এমন আবেগী ভালবাসা প্রকাশ আমাদের আরো উত্সাহিত করেছে। এটাই আমাদের স্বার্থকতা। এদের ভালবাসায় ঘুরে দাঁড়াবে হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।

এদিকে, স্কুল পড়ুয়া এই দরিদ্র শিশুদের এমন উদ্যোগের কথা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকা তথা দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ফেসবুকে দেয়া মন্তব্যে অনেকে সাধুবাদ জানান শিশুদের এই উদ্যোগকে।

সূত্র: ইত্তেফাক

আপনার মন্তব্য

আলোচিত