সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ ডিসেম্বর, ২০১৭ ২১:৪৯

বাগেরহাটে ‘কোচিং সেন্টারের’ প্রশ্নপত্রে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা

বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় একটি বিষয়ে কোচিংয়ের প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনা তদন্তে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) স্কুল কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়টির সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখ আমজাদ হোসেনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক শেখ মো. বেল্লাল হোসেন নিজ বাড়িতে একটি কোচিং সেন্টারে তৃতীয় শ্রেণির বেশকিছু শিক্ষার্থীকে পড়ান।

প্রায় পনেরো দিন আগে ওই কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থীদের ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’বিষয়ে মডেল পরীক্ষা নেন তিনি। ওই প্রশ্নে সঙ্গে বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ওই বিষয়ের প্রশ্নপত্র হুবহু মিলে গেছে বলে তাদের ভাষ্য।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, গত শনিবার বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি’ বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষক বেল্লাল হোসেন তাঁর কোচিং-এ চূড়ান্ত বার্ষিক মডেল টেস্ট পরীক্ষা নেন। সেই পরীক্ষায় যে প্রশ্নপত্র ছিল, বিদ্যালয়ের পরীক্ষায়ও হুবহু সেই একই প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্রে সম্পূর্ণ একই প্রশ্ন ছিল। মডেল টেস্ট, সাজেশন বিভিন্ন নামে অনেক অসৎ শিক্ষকই এ ধরনের প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।

একাধিক অভিভাবক বলেন, বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ শহরের একাধিক স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এ ধরনের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। শুধু বার্ষিক পরীক্ষা নয়, প্রথম সাময়িক ও অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হচ্ছে বিভিন্ন কোচিং থেকে।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রভাতি শাখার খন্ডকালীন শিক্ষক শেখ মো. বেল্লাল হোসেনের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এবিষয়ে বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল মতিন হাওলাদার বলেন, ‘অভিভাবকদের অভিযোগ আমলে নিয়ে আমরা বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছি। মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের প্রভাতি শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক মাওলানা শেখ আমজাদ হোসেনকে প্রধান করে বিষয়টি তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে, অবশ্যই তা অপরাধ। অভিযোগের প্রমাণ পেলে অবশ্যই তাঁর সাজা হবে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদের সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। বর্তমান সরকারের অবস্থান কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।” তাদের তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

তথ্যসূত্র: বিডি নিউজ২৪

আপনার মন্তব্য

আলোচিত