সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ জানুয়ারি, ২০২২ ২৩:৪৫

করোনা নিয়ন্ত্রণে সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধের সুপারিশ

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবায়নে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

শুক্রবার রাতে এক বৈঠকে শেষে পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মােহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ সারাবিশ্বে করোনার সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। সংক্রমণ আবার বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

‘করোনা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে। প্রয়োজনে কর্মসূচি বাস্তাবায়ন নিশ্চিতকরণের জন্য আইনি ব্যবস্থা যেমন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা নিশ্চিত করা, হাত পরিষ্কার রাখা ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। বিভিন্ন স্থানে পুনরায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের উদ্দেশে সব সামাজিক যেমন বিয়ের অনুষ্ঠান, মেলা, ধর্মীয় যেমন ওয়াজ মাহফিল ও রাজনৈতিক সমাবেশ এই সময় বন্ধ করতে হবে।

‘সভা বা কর্মশালার ব্যবস্থা অনলাইনে করা প্রয়োজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ ও নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের বিষয়ে নিয়মিত নজরদারির বিষয়ে পরামর্শক কমিটি গুরুত্বারোপ করছে। এছাড়া শিক্ষার্থীসহ সবাইকে দ্রুত ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সব পয়েন্ট অফ এন্ট্রিতে স্ক্রিনিং, কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন আরও জোরদার করতে হবে।’

সংক্রমণ রেড়ে গেলে তা মোকাবিলায় হাসপাতাল প্রতি বিশেষ করে পর্যাপ্ত সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর।

এর পর থেকে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ক্রমেই কমছিল। একপর্যায়ে ২ শতাংশের নিচে নেমে ১ শতাংশের কাছাকাছি চলে আসে। তবে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের হার ক্রমে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে ২ ছাড়িয়ে ৩ এবং চলতি সপ্তাহে ৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।

বৃহস্পতিবারও পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বুধবার পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, মঙ্গলবার ছিল ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কেবল শনাক্তের হার নয়, ২৪ ঘণ্টায় রোগীর সংখ্যাও গত ২২ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৪৬ জন নতুন রোগী। এর চেয়ে বেশি ১ হাজার ৩৭৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ২২ সেপ্টেম্বর।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৫২টি ল্যাবে ২০ হাজার ২০৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়, যা ১৬ সেপ্টেম্বর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এ নিয়ে দেশে এই পর্যন্ত করোনা ধরা পড়েছে ১৫ লাখ ৯১ হাজার ৯৩ জনের দেহে।

রোগীর সংখ্যা বাড়লেও মৃত্যু কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কেবল একজনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছে। সে একজন শিশু বলে জানানো হয়েছে, যার বাড়ি ময়মনসিংহ। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল সে। আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছিল সাতজন।

এ নিয়ে দেশে করোনায় মারা গেছেন মোট ২৮ হাজার ৯৮ জন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত