আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৮ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:০২

ভারতে করোনার দৈনিক সংক্রমণ ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ

ভারতে সাত মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা লাখ ছাড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ১ লাখ ১৭ হাজার ১০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে রোগীর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি।

এনডিটিভির খবরে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, ভারতে দ্রুতগতিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। করোনার নতুন ধরণ ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে দেখা গেছে। দেশটিতে ১ দিনে ৩৭৭ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ভারতে ৩ হাজার ৭ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হলো।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে নতুন করে ৩০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৩ হাজারে।

এর আগে ২০২১ সালের ৬ জুন ভারতে ১ দিনে ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৬০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। গত সপ্তাহে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে দেখা গিয়েছিল। তবে এক সপ্তাহের মাথায় দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ভারতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৫২ লাখে দাঁড়িয়েছে।

নভেম্বরের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন পুরো বিশ্বেই আতঙ্ক তৈরি করেছে। ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে ২৭টিতেই ছড়িয়ে পড়েছে এ ধরন। সবচেয়ে বেশি ওমিক্রণ শনাক্ত হয়েছে মহারাষ্ট্রে। দেশটিতে ৮৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এরপরই রয়েছে দিল্লির অবস্থান। সেখানে এখন পর্যন্ত ৪৬৫ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

করোনা মহামারিতে ভারতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়া রাজ্যগুলোর একটি মহারাষ্ট্র। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৬ হাজার ২৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মুম্বাইতে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ১৮১ জন। দিল্লিতে ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ৮ মের পর এটি সেখানকার সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা।

ভারতের কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ-আইসিএমআর বলেছে, করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনকে টেক্কা দিয়ে ওমিক্রনই এখন প্রাধান্য বিস্তার করছে ভারতজুড়ে।

এই মুহূর্তে পুরো ভারতে কোভিড নিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৬৩ জন, অর্থাৎ আক্রান্ত হওয়ার পর তারা এখনও সেরে ওঠেননি। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার ৪০১ জন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এবারের সংক্রমণে রোগীদের শরীরে ডেল্টার তুলনায় কম সময় জ্বর থাকছে। ডেল্টায় আক্রান্ত যাদের হাসপাতালে যেতে হয়েছিল, তাদের সিটি স্ক্যানে ফুসফুসের দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল। এবারের রোগীদের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাও কম আসছে।

গবেষণার প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে অনেক গবেষক বলছেন, ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রামক হলেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি ডেল্টার চেয়ে কম।   

তবে এ ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর বিরোধিতা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ওমিক্রনের কারণেও বিশ্বজুড়ে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সুতরাং এ ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণকে ‘মৃদু’ বলা ঠিক হবে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত