সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ মার্চ, ২০২১ ০৯:৪৩

‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের জয়গান’

রোববার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পঞ্চম দিনের অনুষ্ঠানের থিম ছিল ‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের জয়গান’। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নির্ধারিত বিষয়ের ওপর আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।

জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বিন আল হোসেইন এদিন বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভিডিও বার্তা দেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে উন্নয়নের এমন কোনো ক্ষেত্র ছিল না, যেখানে বঙ্গবন্ধুর ছোঁয়া লাগেনি। আজ বদলে যাওয়া বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যা কিছু হচ্ছে, তার সবকিছুরই ভিত্তি রচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ নিয়ে লেখা ‘বাংলাদেশ: দ্য টেস্ট কেইস অব ডেভেলপমেন্ট’ থেকে উদ্ধৃত করেন।

তারা বলেছিলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন পৃথিবীর কঠিনতম সমস্যা। বাংলাদেশে যদি উন্নয়ন হয়, তাহলে পৃথিবীর সব দেশে উন্নয়ন হবে। বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে অন্তত দুইশ বছর লাগবে। এই বাংলাদেশ পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার মাটি আর মানুষ দিয়েই বঙ্গবন্ধুর যাত্রা শুরু হয়েছিল।

তিনি জানান, ১৯৭২ এর ২৬ মার্চ প্রথম স্বাধীনতা দিবসে বেতার ভাষণে বঙ্গবন্ধু বললেন, আজ আমাদের সামনে পর্বততুল্য সমস্যা উপস্থিত। মহাসঙ্কটের ক্রান্তি লগ্নে আমরা উপস্থিত হয়েছি। বিদেশ ফেরত এক কোটি উদ্বাস্তু। স্বদেশের বুকে দুই কোটি গৃহহারা মানুষ। বিধ্বস্ত কর্মহীন চট্টগ্রাম পোতাশ্রয়, নিশ্চল কারখানা, নির্বাপিত বিদ্যুৎ সরবরাহ, অসংখ্য বেকার, অপরিমিত অরাজকতা, বিশৃঙ্খল বাণিজ্যিক সরবরাহ ব্যবস্থা, ভগ্ন সড়ক-সেতু, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। দারিদ্র্য, খাদ্যাভাব, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং অকর্ষিত ভূমি- এই সবকিছুই আমরা পেয়েছি উত্তরাধিকার সূত্রে। জনগণের গভীর ভালোবাসা, আস্থা, অদম্য সাহস ও অতুলনীয় ঐক্যকে সঙ্গী করে আমার সরকার এই সঙ্কটকে কাটিয়ে উঠার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে।

বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে জর্ডানের বাদশার পক্ষে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান আল সাদাফি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে, যার মাধ্যমে দেশের জনগণের সহনশীলতা ও নেতৃত্বের প্রজ্ঞা প্রতিফলিত হয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসী, শান্তি বজায় রাখা, আরও উন্নয়ন এবং জনগণের সক্ষমতা কাজে লাগানোর মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও বেশি অগ্রগতি অর্জন করবে বাংলাদেশ।

এ দিন চীনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে ছিল ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যের ওপর টাইটেল অ্যানিমেশন ভিডিও।

এরপর ‘ক্যানভাসে বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর: শূন্য থেকে মহাশূন্যে’, ‘বঙ্গবন্ধুর নবজীবনের ডাক: ধূসর বাংলা থেকে সবুজ বাংলা’, ‘বিশ্বনেতা ও বিশ্বনাগরিকের সাথে মেলবন্ধন’ এবং ’নারী জাগরণ ও নারীর ক্ষমতায়নে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক কোরিওগ্রাফি দেখানো হয়।

‘শিশু বিকাশে বঙ্গবন্ধু: আলো আমার আলো’ নামে ১০০ জন শিশু শিল্পীর একটি পরিবেশনাও ছিল অনুষ্ঠানে।

সাংস্কৃতিক আয়োজনের একটি অংশে ’২৮৮ দিন’ শিরোনামের নাটকে ফিরিয়ে আনা হয় মুক্তিযুদ্ধকালে বঙ্গবন্ধুর সর্বশেষ কারাজীবনের স্মৃতি।

আমিনুর রহমান মুকুলে নির্দেশনায় আসাদুল ইসলাম রচিত নাটকে ফাঁসির রশি সামনে রেখেও দৃঢ়চেতা বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরা হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার ষষ্ঠ দিন সোমবারের অনুষ্ঠানের থিম ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত