সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু

০১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২২:৫৯

পরীমণি যেন এক মহানায়ক

পরীমণি আসলে নায়িকা নন, নায়কও নন, তিনি রীতিমত মহানায়ক! বলবেন, কেন? বলছি...

১.
র‍্যাব,পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শত শত সদস্য যখন তার বাড়ি ঘেরাও করেছে গ্রেপ্তারের জন্য তখন 'হায় কি হল' বলে ঘরের মেঝেতে বসে সে বিলাপ করেনি। উল্টো ফেসবুক লাইভে এসে একঝটকায় পুরো দেশের নজর তার দিকে টেনে এনেছে।


প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তার এই গ্রেপ্তারপূর্ব লাইভ এবং গ্রেপ্তারের মহাযজ্ঞ প্রায় প্রতিটি টেলিভিশন দু'আড়াই ঘণ্টা ধরে সরাসরি সম্প্রচার করেছে।


তাকে যখন গ্রেপ্তার করে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন সে সালোয়ার কামিজ বা শাড়ি নয়, রীতিমত প্যান্ট-শার্ট পরে পুলিশের গাড়িতে উঠেছে। এসময় অন্যদের মত সে মুখ ঢেকে, মাথা নিচু করে রাখেনি। মাথা সোজা রেখে স্মার্টলি হেঁটেই গাড়িতে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে খুব কম মানুষই এমনটা পারে। এরপর থানা হাজত, আদালত, রিমান্ডে আদালত থেকে থানায় যাওয়া আসার পথে পরীমণি অসম্ভব দৃঢ়চেতা, সাহসী মানুষের অভিব্যক্তি দেখিয়েছে।


শ শ পুলিশের সাথে সামনে থেকে সে যখন হেঁটে গেছে তখন তার ড্রেস, হাঁটার ভঙ্গি দেখে তাকে আসামি বলে মনেতো হয়ইনি বরং ছবির দিকে তাকালে মনে হয়েছে বিশাল মাপের কোন রাজনৈতিক নেতা রাজসিক নিরাপত্তার ছায়ায় জনসভায় ভাষণ দিতে যাচ্ছেন।


আদালতে, আদালত প্রাঙ্গণে তাকে সাধারণ মানুষের মত কারও করুণা প্রার্থনা করতে বা অসহায়ের মত কাঁদতে দেখা যায়নি। বরং মিডিয়াকে লক্ষ্য করে চিৎকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করতে দেখা গেছে, যেমনটা দেখা যায় পোড় খাওয়া রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রে।


সবশেষ চমকটা ছিল আজ বুধবার সকালের। সে কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে, মলিন পোশাকে, মিডিয়ার ক্যামেরা এড়িয়ে কালো কাঁচে ঘেরা কোন গাড়িতে উঠে কারাগার প্রাঙ্গণ থেকে টুপ করে বাড়ি ফিরে যায়নি। বরং অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সে তার পরিকল্পনা সাজিয়েছে।

ধবধবে শুভ্র সাদা ড্রেস পরে, সাদা রঙের ওড়নাকে পাগড়ির মত করে মাথায় বেঁধে চারপাশ হাসিতে আলোকিত করেই সে বাড়ি ফিরেছে।  


এই ফিরে যাওয়ার সময়ও সে হাতের তালুতে মেহেদীর রঙে কীসব লিখে-এঁকে সবাইকে ধাঁধাঁয় ফেলে দিয়ে গেছে। এখন চলছে ঐ সাদা হাতের নকশা, লেখাটি কাকে উদ্দেশ্য করে লেখা তার  রহস্যভেদের ইঁদুর দৌড়।

এবার বলুন পরীমণি, অবলা নারী, অতি সাধারণ মানের নায়িকা, নাকি একটি ঘটনার মহানায়ক!

আপনার মন্তব্য

আলোচিত