শামীম আহমেদ

১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ১৯:৫৯

গুডবাই মাসুদ রানা!

মাসুদ রানার স্রষ্টা, সেবা প্রকাশনীর জনক কাজী আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুতে কিছু একটা লিখতে গিয়ে টের পেলাম লেখক ও প্রকাশক ‘কাজীদা’ ছাড়া তার জীবনের অন্য কোন দিক নিয়ে প্রায় কিছুই জানি না। ফেইসবুকের শত শত স্ট্যাটাস দেখে মনে হলো অন্যরাও তেমন জানেন না।

কাজীদা যে সময়কালের মানুষ, তাদের দুপুরের ভাত খাবার ছবি, সন্ধ্যায় আড্ডার ছবি, বিকেলে হাঁটতে যাবার ছবি কিংবা জাগতিক চিন্তা-ভাবনার প্রতিটা লাইন ফেইসবুকে পাওয়া যায় না। তাই তাঁরা আরাধ্য আমাদের কাছে। গল্পের বইয়ের চরিত্রের মাধ্যমে কাছের হলেও, ব্যক্তি হিসেবে কিছুটা ধরাছোঁয়ার বাইরে। যতটুকু বাইরের হলে একজন মানুষকে নিয়ে চিন্তা করতে ভালো লাগে, ভাবতে ভালো লাগে।

কাজীদা তার চরিত্রের মতোই রহস্যে ঘেরা, যদিও তিনি বলেছিলেন, তিনি ব্যক্তিজীবনে যা হতে পারেননি, তাই ‘মাসুদ রানা’। মাসুদ রানা যখন প্রথম পড়ি ক্লাস ফোরে, তখন এখনকার মতো গুরুত্বপূর্ণ কোন রাষ্ট্র ছিল না বাংলাদেশ। সেই সময়ে কাজীদা মাসুদ রানার মাধ্যমে আমাদের এমন একটা গোয়েন্দা সংস্থা- বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের (বিসিআই) পরিচয় করিয়ে দিলেন, যা কিছুটা হলেও আমাদের মাথা উঁচু করতে, আত্মসম্মানবোধ জাগাতে সাহায্য করেছিল।

সেবা প্রকাশনীর বই পড়ি না বহুদিন। ব্যক্তিগতভাবে আমার রাজ্যে তাই বিস্তর হাহাকারের সুযোগ নেই। তাও অদ্ভুত এক শূন্যতা কোথাও। ৮৫ বছরের জীবনে কাজীদা যা রেখে গেলেন, তা পেরেছেন বাংলাদেশের মাত্র আরেকজন সাহিত্যিক- হুমায়ূন আহমেদ। বাংলাদেশের মানুষকে বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন এমন দুজন মানুষই চলে গেলেন। কিন্তু যা তাঁরা দিয়ে গেছেন আমাদের, তা শুধুই উদযাপনের, অভিবাদনের।

অভিবাদন কাজী আনোয়ার হোসেন। অভিনন্দন কাজীদা। এর চাইতে সফল জীবনযাপন আর হয় না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত