সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

০৭ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ১৫:০৫

‘তারা কীভাবে আশা করে এক মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানে ট্রেনিং নেবেন’

নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে নিয়ে ফেসবুকে অপপ্রচার শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর।

নতুন সিইসিকে নিয়ে অপপ্রচারকারীদের সমস্যার জায়গাটি কি মুক্তিযুদ্ধ- এ নিয়ে প্রশ্ন তাঁর।

শওগাত আলী সাগর ফেসবুকে লিখেছেন, নতুন সিইসিকে নিয়ে তাদের সমস্যাটা কোথায়? তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন- সেটাই সমস্যা? মুক্তিযোদ্ধারা তো ভারতেই ট্রেনিং নিয়েছে, সেটা দেরাদুনে অথবা অন্য কোথাও। তাদের তো আর পাকিস্তান বা করাচীতে ট্রেনিং নেওয়ার কথা না। তা হলে তারা কিভাবে আশা করছে যে নুরুল হুদা পাকিস্তানের কোথাও ট্রেনিং নেবে?

শওগাত আলী সাগর লিখেন,

নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদাকে নিয়ে দেখছি অপপ্রচার শুরু হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ফেসবুকে বেশ কয়েকটি পোষ্ট চোখে পড়লো- যেখানে বলা হয়েছে তিনি মুজিব বাহিনীর লোক, দেরাদুনে ট্রেনিং নিয়েছেন।

অথচ সিইসি নিজে বলেছেন, তিনি ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর জলিলের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন।

নতুন সিইসিকে নিয়ে তাদের সমস্যাটা কোথায়? তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন- সেটাই সমস্যা? মুক্তিযোদ্ধারা তো ভারতেই ট্রেনিং নিয়েছে, সেটা দেরাদুনে অথবা অন্য কোথাও।

তাদের তো আর পাকিস্তান বা করাচীতে ট্রেনিং নেওয়ার কথা না। তা হলে তারা কিভাবে আশা করছে যে নুরুল হুদা পাকিস্তানের কোথাও ট্রেনিং নেবে?

উল্লেখ্য, সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কে এম নুরুল হুদাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে জানান মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব শফিউল আলম। ইসির বাকি সদস্যরা হলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরীকে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, সিইসি হিসেবে যাঁকে বেছে নেওয়া হয়েছে, বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সুপারিশে সিইসি হিসেবে তাঁর নাম ছিল না।

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বর্তমান সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমদের মেয়াদ শেষ হবে। একই সঙ্গে মেয়াদ শেষ হবে আরও তিন কমিশনারেরও। ১৪ ফেব্রুয়ারি মেয়াদ শেষ হবে কমিশনার শাহনেওয়াজের।

নূরুল হুদা পটুয়াখালীর বাউফলের সন্তান। স্বাধীনতা যুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধে অংশ নিয়ে পটুয়াখালী জেলা পাক হানাদার মুক্ত করতে ভূমিকা ছিল তার।

১৯৪৮ সালে জন্ম নেওয়া নূরুল হুদা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যা বিভাগে সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের আবাসিক এ ছাত্র ১৯৭২-৭৩ সালে হল ছাত্র সংসদে সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময়ই বরিশাল অঞ্চলে মেজর জলিলের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন নূরুল হুদা। পরে জাসদের সঙ্গেও সম্পৃক্ততা ছিল তার।

নূরুল হুদা ১৯৭৩ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সরকারি কর্মকমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ওই বছরের ৩০ জুলাই প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন।

চাকরিজীবনে ফরিদপুর ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছাড়াও কিছু মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কুমিল্লার জেলা প্রশাসক থাকার সময়ে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেরুয়ারি এবং ১২ জুলাই নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন নূরুল হুদা। এছাড়া তিনি এরশাদ আমলে ১৯৮৫ সালে উপজেলা নির্বাচন এবং ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনেও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন।

যুক্তরাজ‌্যের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন নূরুল হুদা। সরকারি চাকরি শেষে ২০১০ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে, ছিলেন ৫ বছর।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত