১৩ এপ্রিল, ২০২০ ২১:২১
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস ইতিমধ্যে কমিউনিটি সংক্রমণ হয়ে গেছে। এটি ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো টেস্ট আর ঘরে থাকা।
এই টেস্ট আরো আগে বাড়ানো হলে আরও ভালো হতো। যত দ্রুত টেস্ট করে রোগি সনাক্ত করা যাবে তত ভালো।
বড় দুঃসময় অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য, অর্থনৈতিক সংকট, স্বাস্থঝুঁকি সব মিলিয়ে ক্রমান্বয়ে অনিশ্চিত অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছি।
সাধরণ ছুটি বা সন্ধ্যার পর কঠোরতায় জনগণকে ঘরের মধ্যে রাখা যাবে না। ঘরে রাখার জন্য প্রয়োজনে কারফিউ জারি করা হোক। সরকারের উচিত হবে এখনই কারফিউ জারি করা। একক, দশক, শতক, কদিন পর হবে হাজারে হাজার। কারণ আমরা এখনও রাস্তা ঘাট, হাট-বাজারে ঘুরে বেড়াই।
অর্থনীতির কথা চিন্তা না করে বর্তমান এই মহামারীর বিপদ কিভাবে কাটানো যায় সেটিই চিন্তা করা উচিত৷ সবকিছুই যেহেতু বন্ধ সেখানে সাধারণ ছুটি নাম দিয়ে এটাকে হালকা করা হচ্ছে কেন? মনে রাখতে হবে, এটি একটি সাময়িক মন্দা, মহামারী চলে যাবার পর সবই দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে আমি আশাবাদী৷
বাংলাদেশে দ্রুত বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে করোনা পরীক্ষার সুযোগ করে দেয়া হোক। আমরা সব জায়গায় পিছিয়ে আছি। ভারত পাকিস্তানে বেসরকারি হাসপাতালগুলো করোনা পরীক্ষা শুরু করেছে।
নইলে সরকারি হিসেবে হয়তো করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাবার সংখ্যা হবে ৫ জন। কিন্তু এই উপসর্গ নিয়ে মারা যাবে আরও ৫০ জন। কারণ আমরা তো টেস্টই করছি না। দৈনিক দশ হাজার মানুষের টেস্ট হলে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা অন্তত বোঝা যেতো।
ব্যাপকহারে পরীক্ষা আরো এক মাস আগে থেকেই শুরু করা উচিত ছিল। বিমানবন্দরেই পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা উচিত ছিল। কিন্তু কোনো কিছুই করা হয়নি সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে। এতদিন 'নো টেস্ট নো করোনা' এই নীতি আমরা অনুসরণ করেছি।
আমরা সবসময় আত্মতুষ্টিতে ভুগি এইভেবে যে- বাংলাদেশে কখনও ইতালি-আমেরিকার মতো এতো মানুষ আক্রান্ত হবে না। এমন ধারণা ইতোমধ্যে ভুল প্রমাণিত হতে শুরু করেছে।
অবাক হওয়ার কিছুই নেই। আমরা আশঙ্কা করোনা বাংলাদেশে অনেক আগেই ছড়িয়ে পড়েছে। কারন এতদিন টেস্ট করা হত, মোটে ত্রিশ-চল্লিশটা। এখন করা হচ্ছে ১২০০-১৫০০। গড়ে প্রতি নয় জনে একজন আক্রান্ত ধরা পড়ছে। তাই বলা যায়, টেস্ট যদি একদিনে ১০হাজার করা হয় তাহলে আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াতে পারে প্রায় ১৫০০। তাহলে এখন উপায়?
উপায় একটাই, টেস্টের পরিমান বাড়িয়ে দেওয়া। সবার উদ্দেশ্য বলব, জ্বর, কাশি, শ্বাসকস্ট হলেই হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ফোনে জানিয়ে টেস্ট করানোর ব্যবস্থা করুন। সরকারকে বলবো, যত বেশি পারা যায় টেস্টের পরিমান বাড়িয়ে দিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এটাই একমাত্র উপায়।
(ফেসবুক থেকে নেওয়া)
মতিউল বারী চৌধুরী: ব্যাংকার ও সাংবাদিক।
আপনার মন্তব্য