তন্ময় মোদক, শাবি

২৮ মার্চ, ২০১৫ ১৮:৪০

নবীনদের পদভারে দীর্ঘদিন পর প্রাণ পেলো শাবি

শাবিতে নতুন ব্যাচের নবীনবরণ

নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আগমনকে কেন্দ্র করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ক্যাম্পাস আবার মুখরিত হয়ে উঠেছে। গত ক’মাসের আতঙ্ক ছাড়িয়ে নতুন শিক্ষার্থী, অভিবাবক এবং বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় শাবি।

শনিবার (২৮ মার্চ) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার সকাল ১০টায় নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম শুরু হয়। তবে সকাল ৯টা থেকে নতুন শিক্ষার্থীরা একা অথবা দলবেঁধে ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করে। সবার চোখেমুখে নতুন কিছু দেখার, নতুন কিছু করে দেখানোর এক অপূর্ব জ্যোতি।

গলায় পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষাভবনের ‘টঙে’ (ছোট দোকান) নতুন শিক্ষার্থী-অভিবাবকদের ছোটবড় জটলা ক্যাম্পাসে পুনরায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসার আভাস দেয়।

২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. নাজিয়া চৌধুরী স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম শুরু হয়। তিনি এবারের ১ম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে কিছু পরিসংখ্যান নবীন শিক্ষার্থী ও অতিথিদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা লেখাপড়া করে আদর্শ নাগরিক এবং দেশের কল্যাণ সাধন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্যে শাবি ভিসি প্রফেসর ড. আমিনুল হক ভূইয়া বলেন, ‘তোমরা ভাগ্যবান। কারণ তোমরা শাবির মতো একটি সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছ। পরিবারের গন্ডির বাইরে আজ থেকে তোমাদের স্বাধীন জীবন শুরু হল। যারা এ স্বাধীনতার সদ্ব্যবহার করবে তারাই সফল হবে। তোমাদের মধ্যে ভবিষ্যত বিজ্ঞানী, সমাজ সংস্কারক, বুদ্ধিজীবী এবং দেশের কর্ণধার লুকিয়ে আছে। ভবিষ্যতের যোগ্য নাগরিক হিসেবে তোমাদেরকে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে মন দিয়ে লেখাপড়া করতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইআইসিটির পরিচালক প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘আজকের দিনটি তোমাদের জন্য অনেক স্মরণীয়। কারণ কলেজ পাস ছাত্রছাত্রী হিসেবে তোমরা আজকের এই বরণ অনুষ্ঠানে এসেছ। অনুষ্ঠান শেষে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর পরিচয়ে এই অডিটোরিয়াম থেকে বের হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময় একটি কথা তোমরা মনে রাখবে, তোমরা গরীব মানুষের অর্থে লেখাপড়া করছ। তোমাদের প্রত্যেকের পেছনের সরকার প্রতিবছর চার লক্ষাধিক টাকা খরচ করছে। কাজেই তোমারা মন দিয়ে লেখাপড়া করবে।’

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে শাবি কোষাধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস, ওরিয়েন্টেশন কমিটির সদস্য সচিব রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন এবং বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

গত ২০ নভেম্বর শাবি ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীন কোন্দলের জেরে সুমন চন্দ্র দাস নামে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ১৮ জানুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও হরতাল-অবরোধের ও শাবি ছাত্রলীগে চাপা উত্তেজনার কারণে ক্লাস-পরীক্ষা এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সমাগম কম ছিল। পরে গত ১৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর ড. আমিনুল হক ভূইয়া ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন করায় ক্যাম্পাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া শুরু হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত