১৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০১:২৩
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
এদের চারজনকেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মতিহার থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে থেকে ১৪ শিক্ষার্থীকে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আটককৃতরা হলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লিটন, দ্বিতীয় বর্ষের মোহায়মিন, আরবি দ্বিতীয় বর্ষের শারুখ, সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাসিম। বাকিদের শিবির সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী জানায়, সন্ধ্যায় প্যারিস রোডে একসঙ্গে হাঁটাহাঁটি করছিল তারা। তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের পাশের ওই রাস্তায় তাদের থামতে বললে তারা দৌড়ে এদিক-সেদিক পালানো শুরু করে। ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে পৌঁছলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গিয়ে তাদের আটক করে। প্রথমে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে নিয়ে, পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বঙ্গবন্ধু হলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে চলমান এ ঘটনার সময় মতিহার হল ও মমতাজ উদ্দিন কলাভবনের সামনে দুইটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমরা খবর পেলাম ছাত্রশিবিরের একটি দল ক্যাম্পাসে মিছিল করছে। সংবাদটি শুনে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনের রাস্তায় তাদের থামতে বলা হয়। কিন্তু এদিক-সেদিক দৌঁড়ে তারা অনেকে পালিয়ে যায়। পরে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনে গিয়ে তাদের ১৪ জনকে আটক করতে সক্ষম হই। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চারজন শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ পেয়ে তাদেরকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। বাকীদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’
ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শিবিরের কয়েকজনকে ধরেছি। এসময় আবার দুইটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করতে তারাই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।’
জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ উজ জামান বলেন, ‘হলে শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীদের আটক করেছিল ছাত্রলীগ। আমি এসে যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে হল থেকে বের করে দিয়েছি। তবে বাইরের শিক্ষার্থীদের এই হলে ঢোকানো আমার পছন্দ হয়নি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানলে পুলিশ প্রশাসনকে জানাই। ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীদের আটক করেছে ছাত্রলীগ। এরপর তাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নিয়ে যায় তারা। এরপর আমি নিজে ঘটনাস্থলে গেলে তারা আটককৃতদের পুলিশে সোপর্দ করে।’
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে নগরীর মতিহার থানার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘আটককৃত চার শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মন্তব্য