সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ জুলাই, ২০১৮ ১৫:৪৮

সিলেটের মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবিকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে চলচ্চিত্র

মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবিকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন পরিচালক শহীদুল হক খান। এতে অভিনয় করবেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনয়শিল্পী সিমলা।

মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) এফডিসিতে ছবির মহরত অনুষ্ঠিত হয়।

শহীদুল হক খান বলেন, ‘আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রায় প্রতিবছরই ছবি নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু সেই যুদ্ধে নারীদের ভূমিকায় খুব ভালোভাবে তুলে ধরা হয়নি। অথচ কাঁকন বিবির মতো অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধা আছেন, যাঁরা দেশকে স্বাধীন করার জন্য কাজ করেছেন। কখনো কখনো পুরুষের চেয়ে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন নারীরা। আমরা এই ছবির মধ্য দিয়ে নতুন করে মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরব। আশা করি, ছবিটি সবার কাছে ভালো লাগবে। আমাদের প্রজন্ম জানতে পারবে নারীদের অংশগ্রহণের কথা।’

কাঁকন বিবির চরিত্রে অভিনয় করতে যাওয়া সিমলা বলেন, ‘এমন একটি কাজের সঙ্গে আমি যুক্ত হতে পারব, তা আগে কখনো চিন্তা করিনি। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এটা আমার ভাগ্য যে কাঁকন বিবি চরিত্রে আমি কাজ করতে পারছি। আমি এমনিতেই কাজ একটু কম করে থাকি। তবে কাঁকন বিবির মতো কাজের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষায় থাকি।’

নিজের চরিত্র নিয়ে সিমলা আরো বলেন, ‘এই ছবিতে আমি তিনটি গেটআপ নিয়ে দর্শকদের সামনে উপস্থিত হবো। প্রথমে আমি একজন কিশোরী, তারপর যুবতী এবং শেষে আমি বৃদ্ধ কাঁকন বিবি। আমি এরই মধ্যে নিজের চরিত্র নিয়ে গবেষণা করছি। কিশোরী ও যুবতীদের আচরণ আমি জানি। বৃদ্ধদের আচরণ এমনিতে জানি, কিন্তু এখন সূক্ষ্মভাবে তা পর্যবেক্ষণ করছি।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এর আগে অনেক ছবি আমি দেখেছি, কিন্তু এই ছবির চরিত্র ও গল্পগুলো আমার কাছে একেবারেই নতুন মনে হচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়, দর্শক নতুন কিছু দেখবে।’

ছবিতে সিমলা ছাড়াও অভিনয় করছেন নবাগত অঞ্জলী সাথি। গতকাল মহরতের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবি। গত ১৯ মার্চ তিনি  নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এছাড়া কাঁকন বিবি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট সহ হৃদরোগে রোগে ভুগছিলেন।

গত ২১ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কাঁকন বিবি।

১৯৭১ সালে ৩ মাস বয়সী মেয়ে সখিনাকে রেখে মুক্তিযুদ্ধে যান কাঁকন বিবি। প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে গুপ্তচরের কাজ করলেও পরবর্তী সময়ে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। পাক বাহিনীর হাতে আটক হয়ে নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন এই যোদ্ধা।

১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করলেও তা গেজেট আকারে প্রকাশিত না হওয়ায় নামের পাশে এই খেতাবটি জোটেনি এই মুক্তিযোদ্ধার। কাঁকন বিবি প্রায় ২০টি যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত