উত্তম কাব্য

১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৮:৩৯

বিশ্বের প্রথম কলম ভাস্কর্য ও জাদুঘর তৈরি হবে বাংলাদেশে

সারা বিশ্বে ভাস্কর্যের অভাব নেই।অনেক ভাস্কর্য আছে সারা পৃথিবীতে। কিন্তু কলম ভাস্কর্যের কথা কোথায় কি শোনা গেছে? তবে বাংলাদেশে নির্মিত হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম কলম ভাস্কর্য ২০২১ এবং কলম জাদুঘর। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হবে এই ভাস্কর্যটি। মোট ৫০ মাস কলম সংগ্রহের পর ২০২১ সালের স্বাধীনতা দিবসে উদ্বোধন করা হবে এই ভাস্কর্যটি। এতে ব্যবহৃত হবে ৫০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০টি উচ্চ বিদ্যালয় ৫০ টি কলেজ এবং ৫০ টি বিশ্ববিদ্যালয় এর মোট ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রীর পরিত্যক্ত ৫০ লাখ কলম। ছাত্রছাত্রীদের কলমের পাশাপাশি এখানে ব্যবহৃত হবে বাংলাদেশের ৫০ জন বরেণ্য ব্যাক্তির কলম।

৫০ ফুট উঁচু এই ভাস্কর্যটিই হবে বিশ্বের প্রথম কলম দ্বারা নির্মিত ভাস্কর্য। প্রায় ৫০ লাখ কলম দিয়ে তৈরি হতে যাচ্ছে এই কলম ভাস্কর্যটি। আর এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করতে  অংশ নিচ্ছে প্রায় ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রায় ৫০টি কলেজ, প্রায় ৫০টি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীবৃন্দ। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল ছাড়াও ৫০ জন করে বরেণ্য লেখক-লেখিকা, সম্পাদক,শিল্পী ও কলামিস্টসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও তাদের নিজেদের কলমের মাধ্যমে এ ভাস্কর্য নির্মাণে ভূমিকা রাখবেন।এটি নির্মাণ করবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার ৫০ জন তরুণ এবং ৫০ জন তরুণী।  

এটি নির্মিত হবে টাংগাইল জেলার মধুপুর উপজেলার এইচ এম জাহাঙ্গীর কবির প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। তবে সরকারের সাথে আলোচনা করে যদি ভালো কোন জায়গা পাওয়া যায় তাহলে জেলা সদরের কাছেও নির্মিত হতে পারে।ভাস্কর্যটি নির্মানের জন্য এরই মধ্যে সারা দেশ থেকে ২০ লাখ কলম জমা হয়ে গেছে।

আর এই ভাস্কর্য নির্মাণে প্রচারণার জন্য সম্প্রতি একটি থিম সং তৈরি হয়েছে। এই থিম সংটি লিখেছেন বরেণ্য গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান। সুর ও সংগীত করেছেন বিশিষ্ট সুরকার মইনুল ইসলাম খান। আর গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন দেশ বরেণ্য কণ্ঠ শিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা ও  মাকসুদ। তাদের সঙ্গে গেয়েছেন সুর সপ্তক গানের স্কুল, সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, বাংলাদেশ সোসাল ওয়ার্ক ফাউনন্ডেশন  এর প্রেসিডেন্ট শরিফুল ইসলাম শিবলী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইদুল ইসলাম খান ও  ভাস্কর্য গ্রুপের মেম্বাররা মিলে মোট ৫০ জন্য শিল্পী। গতকাল বিকালে শ্রুতি স্টুডিওতে এ গানটির রেকর্ডিং সম্পন্ন হয়। এদিকে এই ভাস্কর্যটিকে সফল রূপ দেয়ার জন্য শিল্পী, গীতিকবি ও সুরকার কোনো সম্মানি নিচ্ছেন না। নিজেদের মনের টানেই এই কাজটি করছেন তারা।
 


এ বিষয়ে গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান বলেন গণমাধ্যম কে বলেন, এত বড় ও মহৎ কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি গর্বিত ও আনন্দবোধ করছি। আশা করছি এই ভাস্কর্যটি সফল রূপ পাবে খুব শিগগিরই। সুরকার মইনুল ইসলাম খান বলেন, যে গানটি করেছি সেটি নিয়ে আমরা সবাই আশাবাদী। কলমের এত বড় ভাস্কর্য কোথাও হয়নি। এই ভাস্কর্যটির ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখতে পারছি বলে ভালো লাগছে।

দেশ বরেণ্য কণ্ঠ শিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা সিলেটটুডে২৪কে অনলাইন তাঁর মতামত জানতে চাইলে তিনি  বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৫০ তম বর্ষপূর্তিতে বরেন্য ব্যক্তি দের কলম সহ আপামর জনতার কলম দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা দের উৎসর্গ  করে যে কলম ভাস্কর্য তৈরী হচছে তাতে সম্পৃক্ত হতে পেরে আমি ধন্য।আমি আমার সমস্ত কাজ মহৎ কাজে ঢেলে দিতে চাই।আর এতে যে যুবা সম্প্রদায় এগিয়ে এসেছে স্বার্থহীন ভাবে এতে আমি ভীষণ আনন্দিঈ।তারাই আসলে আমাদের দেশের পাঞ্জেরী।
 
ভাস্কর্যটির উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে  এইচ.এম.জাহাঙ্গীর কবির অনলাইনে সিলেট টুডে২৪ ডট কমকে তাঁর মতামত জানান,  আসলে কলমের শক্তির কাছে অস্রের শক্তি কিছুই না। পৃথিবীতে অনেক রকম ভাস্কর্য রয়েছে। কিন্তু কলমের কোন ভাস্কর্য নেই। তাই কলমের ভাস্কর্য নির্মাণ করে কলমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাই। আর বর্তমানে হানাহানি মারামারি করে আমরা পৃথিবীটাকে অশান্তিতে ভরে দিয়েছি। তাই অস্র ফেলে কলমে পৃথিবীটা সাজানোর আহবান জানাই।
তরুণরাযে সব কিছুই পারে তা এই নির্মাণের মধ্য দিয়ে সবার কাছে এই বার্তাটি পৌছে দিতে চাই।জয় হোক কলমের শক্তির, জয় হোক ভাতৃত্বের।

কণ্ঠ শিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপার "খেলাঘর" ইশকুল এর সদস্য মাইদুল ইসলাম বলেন,স্বাধীনতার ৫০ বছরপুর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে ৫০ লাখ কলম দিয়ে ভাস্কর্য নির্মাণের এই উদ্যোগ অবশ্যই মহতি ও ব্যতিক্রম। 'আমাদের খেলাঘর ইশকুল' এর সদস্য হিসেবে এই কাজে যুক্ত হতে পেরে গর্ববোধ করছি। আমি এই উদ্যোগের সফলতা কামনা করছি।

সুরসপ্তক সংগীত একাডেমীর  কোঅরডিনেটর খন্দকার হাবিবুল ইসলাম শান্ত  বলেন, নিঃসন্দেহে কলম ভাষ্কর্য মহৎ উদ্যেগ।আমরা সুরসপ্তক পরিবার গর্বিত এমন মহতী কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে।মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশতম বর্ষপূর্তিতে তরুনদের এমন নিঃস্বার্থ উদ্যেগ সকলেরই প্রশংসার দাবিদার।আমি এই কাজে সম্পৃক্ত সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।এ কাজে সুরসপ্তক সবসময় সহযোগিতা করে যাবে।জানি তারুণ্যের জয় হবেই হবে।

তারুণ্যের এই প্রয়াসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে একটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাই দেশের যে কোনো প্রান্ত যে কেউ আমাদের পুরাতন কলমটি জমা রেখে, কলমের কারুকার্যে সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলতে পারেন  দেশে এক নতুন ইতিহাস।কলম দিতে আগ্রহী যে কেউ  যোগাযোগ করতে পারেন এই নাম্বারে 01706070666 অথবা "বিশ্বের প্রথম কলম ভাস্কর্য ও কলম জাদুঘর" ফেসবুকের  এই পেজে মেসেজ দিয়েও যোগাযোগ করা যাবে।




আপনার মন্তব্য

আলোচিত