ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১২ জানুয়ারি, ২০১৫ ১১:০৭

প্যারিসে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্ব নেতাদের সমাবেশ

শার্লি এবদুর ঘটনাসহ ফ্রান্সে তিনদিনের প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একাত্মতা প্রকাশ করে প্যারিসে এক সমাবেশে যোগ দিয়েছেন পশ্চিমা ও মুসলিম দেশগুলোর প্রায় ৪০ নেতা



প্যারিসের কেন্দ্রীয় প্লাস দুলা রেপিউবলিক থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়।


সম্মুখভাগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদের পাশে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস,ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি,ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন, তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাভুতোগলু,মালির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইটাসহ অন্যান্য বিশ্বনেতারা উপস্থিত ছিলেন।


পদযাত্রা শুরুর সময়ই নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনসহ হাত হাত ধরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একাত্মতা প্রকাশ করেন তারা।


এক বিবৃতিতে ওঁলাদ বলেন, “আজ প্যারিস বিশ্বের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। আমাদের পুরো দেশ জেগে উঠবে।”


মিছিলের নিরাপত্তার জন্য প্যারিসের ছাদে ছাদে স্নাইপার মোতায়েনসহ ২,২০০ পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করে “নজিরবিহীন নিরাপত্তা” পদক্ষেপ নেয়া হয়।


যে পথে মিছিল এগিয়েছে সেপথে আগের দিন থেকেই ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে।


ওদিকে, শনিবার দেশটির প্যারিস, অর্লেন্স, নিস, পাউ, তুলুজ ও ন্যানেতস্’র মতো বড় বড় শহরগুলোসহ সারাদেশে প্রায় ৭,০০,০০০ লাখ মানুষ নিহতদের স্মরণে বিভিন্ন মিছিলে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।


বুধবার প্যারিসে বিদ্রুপ সাময়িকী শার্লি এবদুর কার্যালয়ে হামলা চালানোর মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া তিনদিনের তাণ্ডবে সাংবাদিক, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৭ জন 
নিহত হয়।


পরে পুলিশের গুলিতে তিন হামলাকারী নিহত হয়। হামলাকারীদের সহযোগীদের খোঁজে ফ্রান্সজুড়ে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। আসছে সপ্তাহগুলোতেও ফ্রান্সজুড়ে উচ্চ সতর্কাবস্থা জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নাড ক্যাজনভ।


প্রতিবাদ মিছিলগুলোতে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন লেখা সম্বলিত ব্যানার বহন করলেও মিছিলগুলোর অধিকাংশই মৌন মিছিল ছিল। ব্যানারগুলোতে “আমি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে”, “আমি শার্লি” লেখা ছিল।


দুই ভাই শেরিফ কোয়াশি ও সাঈদ কোয়াশি শার্লি এবদুর কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে আট সাংবাদিক ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১২ জনকে হত্যা করে। হামলার আহত হন আরো ১১ জন।


এরপর শুক্রবার আরেক হামলাকারী আমেদি কুলিবালি প্যারিসে ক্যাশার নামের একটি সুপারমার্কেটে কয়েক জনকে জিম্মি করেন। পরে এখানে চার জিম্মিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।


এর আগে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ প্যারিসে এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছিলেন, কুলিবালিই তাকে হত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।


প্যারিসে ক্যাশার সুপারমার্কেটের সামনে আয়োজিত বড় একটি প্রতিবাদ সমাবেশে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আজ, আমরা সবাই শার্লি, আমরা সবাই পুলিশ কর্মকর্তা, আমরা সবাই ফ্রান্সের ইহুদি।”


শনিবার থেকেই প্যারিসজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যাপক পুলিশ ও সেনা সদস্যের উপস্থিতি ছাড়াও অতিরিক্ত ৫০০ সেনা সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে।


দেশকে রক্ষার জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত