নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ১৯:০৮

প্রবাসের মুক্তিযুদ্ধ, প্রবাসের মুক্তিযোদ্ধা

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কর্মকান্ডের স্থিরচিত্র নিয়ে সিলেটে শুরু হয়েছে ‘লন্ডন ১৯৭১’ শিরোনামে আলোকচিত্র প্রদর্শনী।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর রিকাবীবাজারের মোহাম্মদ আলী জিমনেসিয়ামে শুরু হয় চারদিনব্যাপী এ প্রদর্শনী। ১৯৭১ সালে বিলেতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাংলা ও ইংরেজি সংবাদপত্রের কাটিং, পোস্টার, প্রচারপত্র ও ঐতিহাসিক ছবি নিয়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও বিলেতে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক রাষ্ট্রদূত, প্রফেসর এমেরিটাস ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বাংলাদেশের পর সবচেয়ে বড় আন্দোলন হয়েছে যুক্তরাজ্যে। আর সেই আন্দোলনে অংশ নেওয়া নব্বই শতাংশ লোকই ছিলেন সিলেটের।

যুক্তরাজ্যসহ দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এই আন্দোলন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সহযোগীতা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক দেশই আছে দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে কিন্তু আন্তর্জাতিক সমর্থন ও স্বীকৃতির অভাবে স্বাধীনতা পাচ্ছে না।

একাত্তরের ছবি নিয়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজনকেত সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই আয়োজনের ফলে দুই ধরণের লোক উপকৃত হবে। এক ধরণের হচ্ছি, আমরা- যারা সেই সময়ের স্মৃতিগুলো আবার রোমন্থন করতে পারবো। আর উপকৃত হবে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, আর দীর্ঘদিন ভুল ইতিহাস শিখে বড় হয়েছে।

উদ্বোধকের বক্তব্যে একে আব্দুল মোমেন বলেন, একাত্তরে যুক্তরাজ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্দোলন করেছেন, তারা হয়তো অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেননি। কিন্তু তারাও যোদ্ধা। তারাও মুক্তিযোদ্ধা। তাদের কারণে ইংল্যান্ড সরকারও আমাদের গুরুত্ব দিয়েছে।

তিনি বলেন, সেইসময়ে যুক্তরাজ্য থেকে প্রবাসী বাঙ্গালিরা মুজিবনগর সরকারকে ১০ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন, অস্ত্র পাঠিয়েছেন। তখনকার প্রবাসীরা প্রত্যেকে নিজেদের আয়ের দশ শতাংশ বাংলাদেশ ফান্ডে জমা রেখেছেন। তাদের অনেককেই আমরা চিনি না। এইসব লোকদের চিহ্নিত করে করে সম্মানিত করতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থ মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব জালাল আহমেদ, ব্রিটিশ কাউন্সিলের আর্ট ডিরেক্টর ক্যানড্যাল রবিনস, জামালপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান। আলোচক হিসেবে ছিলেন মদনমোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ্ ফাত্তাহ্ ও বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।

প্রজেক্ট লন্ডন ১৯৭১’র চেয়ারম্যান ফজলুল কবীর তুহিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এই প্রজেক্টের উদ্যোক্তা উজ্জ্বল দাশ।

আয়োজকরা জানান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগীতা এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। সকলের জন্য উন্মুক্ত এ প্রদর্শনী প্রতিদিন বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে রাত ৮টায় শেষ হবে। চলবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত