সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ জুন, ২০১৬ ২৩:৫০

বর্ষায় শিশুর যত্ন

হঠাৎ বৃষ্টি, ভ্যাপসা গরম, আবার ঠাণ্ডা বাতাসও হয়ে থাকে। বর্ষায় আবহাওয়া থাকে স্যাঁতসেঁতে। এসময়  দেখা দেয় নানা ধরনের অসুখ-বিসুখের প্রাদুর্ভাব। আবহাওয়ার এই পরিবর্তন ছোট শিশুরা সহ্য করতে পারে না। এসময় বড়দের চেয়ে অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হয় শিশুরাই বেশি। শিশুদের সর্দি-কাশি, ভাইরাস জ্বর, টাইফয়েড জ্বর, ডেঙ্গু জ্বর, ছত্রাক সংক্রমণ, ডায়রিয়াতে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। সেজন্য সতর্ক থাকা খুব জরুরি।

ভাইরাস জ্বর
এই সময় গরমে শিশু ঘেমে যায়। মুছে না দিলে সেই ঘাম শরীরে বসে ভাইরাস জ্বর হয়। আবার বৃষ্টিতে ভিজেও এ জ্বর হতে পারে। ভাইরাস জ্বরে শিশুর শীত শীত ভাব, শরীর ব্যথা, মাথা ব্যথা, খাওয়ার অরুচি, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ লাল হওয়াসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। অনেক শিশুর পেটের সমস্যা, ডায়রিয়া বমিও হতে পারে। স্বাভাবিক পানিতে সুতি কাপড় ভিজিয়ে পুরো শরীর চেপে চেপে মুছে দিলে শিশুর জ্বর অনেকটাই কমে আসবে। নানা রকম তরল খাবার যেমন-পানি, ঘরে তৈরি ফলের রস, সবজির স্যুপ এ সময় শিশুর জন্য আদর্শ খাবার। পাশাপাশি হারবাল চা, আদার রস, তুলসী পাতার রসও বেশ উপকারী।

সর্দি-কাশি
প্রচণ্ড গরমের পর হঠাৎ করে বৃষ্টি এবং কিছুটা ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় শ্বাসতন্ত্র সহজেই সংক্রমিত হয়ে সর্দি-কাশি হয়। ফলে জ্বর, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি-কাশি ইত্যাদি দেখা দেয়। সর্দি-কাশিতে ঘরোয়া দাওয়াই বেশ কার্যকর। আদা ও লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে কিংবা আঙুরের রস খাওয়ালে শিশুর কাশি অনেকটা কমে যাবে। সঙ্গে আদা, লেবু, পুদিনা পাতা দিয়ে রং চা, তুলসি পাতার রস ও মধু মিশিয়ে খাওয়ালেও শিশু আরাম পাবে। সর্দিতে নাক বন্ধ থাকলে লবণ জলের পানি কিংবা ‘ন্যাজাল ডিকনজেসট্যান্ট’ এক-দুই ফোঁটা দিয়ে নাক পরিষ্কার করা যেতে পারে।

ডেঙ্গুজ্বর
শিশুর শরীর ব্যথা, মাথা ব্যথা, জ্বর, অক্ষিকোটর ব্যথা, শরীরের হাড় ও মাংসে ব্যথা, চোখ ব্যথা ও পানি পড়া, বমি ইত্যাদি শিশুদের ডেঙ্গুজ্বরের প্রাথমিক লক্ষণ। অনেক সময় নাক দিয়ে ও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, শরীরে রক্তিম আভা, রক্তবমিও হতে দেখা যায়। জ্বর কমানো জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ খাওয়ানো উচিৎ নয়। ডাবের পানি, ওরস্যালাইন, জুস এ সময় শিশুকে বেশি বেশি খাওয়াতে হবে। ডেঙ্গুজ্বর হলে শিশু রাতে তো বটেই দুপুর ও বিকালে ঘুমালেও মশারি টানাতে হবে। ডেঙ্গুজ্বর থেকে দূরে থাকতে বাড়ির আশপাশের টবে বা পড়ে থাকা পাত্রে এক সপ্তাহের বেশি পানি জমতে দেয়া যাবে না।

টাইফয়েড
টাইফডে বাহক এবং আক্রান্ত রোগীর মলমূত্র এ রোগের উৎস। বৃষ্টির দিনে ৫ থেকে ১৯ বছর বয়সের মধ্যে এ জ্বর বেশি হতে দেখা যায়। পচা বাসি খাবার, দূষিত পানি, মাছির মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। রোগের প্রথম সপ্তাহে শিশুদের জ্বর, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া ও বমি হয়। প্রথম সপ্তাহের শেষে শরীরে লাল দাগ, কাশি, পেট ফুলে যেতে দেখা দেয়। চিকিৎসা না হলে টাইফয়েড থেকে অন্যসব জটিলতা দেখা দিতে পারে।

ছত্রাক সংক্রমণ
বর্ষায় গরম এবং হঠাৎ বৃষ্টিতে শিশুরা ঘামলে এবং পানিতে বেশিক্ষণ থাকলে অনেক সময় ছত্রাক সংক্রমণ দেখা দেয়। এতে আঙুলের ফাঁকে, কুঁচকিতে, মাথায় ও চুলে ছত্রাক সংক্রমণ হয়। তাই প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।



আপনার মন্তব্য

আলোচিত