ডা. দীপিকা চক্রবর্ত্তী রিমি

১৩ আগস্ট, ২০১৮ ১৮:১৪

মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয় রোগ: সমস্যার প্রকৃতি ও সমাধান

মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয় রোগ একটা দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। এই রোগ সম্পর্কে সঠিক সময়ে বুঝতে না পারলে পরবর্তী জীবনে জটিলতর রূপ ধারণ করতে পারে।

মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয় রোগের মেডিকেল টার্ম হল Degenerative Disc Disease। এটাকে রোগ না বলে রোগের লক্ষণ বলাটাই শ্রেয়।

কারণ:
মহিলাদের এই রোগ বেশি হয়। কারণ হরমোনের প্রভাব এবং কৈশোরে ও পরবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত খেলাধুলা ও শরীরচর্চার অভাব। পঁচিশ বছরের পর থেকেই এই ক্ষয় শুরু হয় মহিলাদের ক্ষেত্রে। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রেও এই রোগের ব্যাপক বিস্তার দেখা যাচ্ছে। জীবনযাপনে শরীরচর্চার প্রভাব কমে মস্তিষ্কের কাজ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ রোগ পুরুষদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে।

লক্ষণ:
১. কাঁধে, পিঠে কিংবা কোমরে ব্যথা।
২. দীর্ঘক্ষণ বসতে কিংবা দাঁড়াতে না পারা।
৩. ধীরে ধীরে ব্যথা সমগ্র পায়ে ছড়িয়ে যাওয়া। তবে সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ে যে কোন একটা পায়েই ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে।
৪. ব্যথার প্রকোপ বাড়লে পিঠে জ্বালা-পোড়া অনুভূতি হতে পারে।

চিকিৎসা: এই ব্যথার চিকিৎসা হিসেবে এখানে কিছু পদ্ধতির নাম উল্লেখ করা যায়। যেমন-
১. ব্যথানাশক এবং অন্যান্য ওষুধ দিয়ে ব্যথা নিয়ন্ত্রণ।
২. ফিজিওথেরাপি এবং যোগব্যায়াম।
৩. সার্জারি।

চিকিৎসার পদ্ধতি হিসেবে এখনো আকুপাংচার কিংবা আয়ুর্বেদিক ঔষধসমূহের বিশেষ স্বীকৃতি না থাকলেও এগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ব্যথা নিরাময় পদ্ধতি:
১. জীবনযাপন পদ্ধতি শুদ্ধিকরণ। প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল যোগ করতে হবে খাদ্য তালিকায়। আমাদের ভেজাল নির্ভর খাদ্য তালিকায় এটা নিশ্চিত করা নি:সন্দেহে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
২. শরীরচর্চা বৃদ্ধি, হাঁটা, সিঁড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। যাদের হাড়ের ক্ষয়জনিত ব্যথা আছে, তাদের অবশ্যই প্রতিদিনের কর্মতালিকায় ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এতে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে।
৩. সর্বোপরি নিজেকে সময় দেয়াটা খুব জরুরি। নিয়মিত প্রার্থনা, মন ভাল রাখার মতো কিছু কাজ অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে করা উচিত।

ব্যথাময় দিন-রাত্রিকে বিদায় জানিয়ে ঝরঝরে, চিন্তামুক্ত জীবনের দিকে এগিয়ে যান।


লেখক: ডা. দীপিকা চক্রবর্ত্তী রিমি

আপনার মন্তব্য

আলোচিত