সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ নভেম্বর, ২০১৮ ২২:০৩

যে ৭ দফা দাবি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ ৭ দফা দাবির ভিত্তিতে হবে বলে আগে থেকেই জানাচ্ছে সরকারবিরোধী নবগঠিত এই জোট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংলাপ শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও শরিক দলগুলোর ২৩ সদস্যের দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। অপরদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. কামাল হোসেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সহ কামাল হোসেনের প্রতিনিধি দলে ২১ জনের থাকার কথা ছিল। সংলাপের জন্য ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় যে পাঁচজনের নামের তালিকা দেওয়া হয়, তাতে গয়েশ্বরের নাম ছিল। সব মিলিয়ে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ২১ নেতা সংলাপে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।

ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলছেন ৭ দফার ভিত্তিতে সংলাপ হবে। ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি হলো:

১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

২. নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা দেওয়া।

৩. বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

৪. কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন, সামাজিক গণমাধ্যমে মতপ্রকাশের অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা।

৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া।

৬. নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং সম্পূর্ণ নির্বাচনপ্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাঁদের ওপর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ না করা এবং গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করা।

৭. তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংলাপে উপস্থিত রয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মহসীন মন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক ও গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিক উল্লাহ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, সহসভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, এস এম আকরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আ ব ম মোস্তফা আমিন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই সংলাপে ১৪ দলীয় জোট থেকে ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল যোগ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্যরা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মো. আবদুর রাজ্জাক, কাজী জাফর উল্যাহ, আবদুল মতিন খসরু, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাসদের একাংশের সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত