নিউজ ডেস্ক

০৫ নভেম্বর, ২০১৮ ১৪:৪৩

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ। সোমবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে কাদের সিদ্দিকী এ ঘোষণা দেন।

বি চৌধুরীও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ড. কামাল হোসেন আমার সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন জানতে পেরে তিনি ওই সম্মেলনে আসেননি। তারপরও আমার দুঃখ নেই। এখন তিনি আসেননি, আশা করি ডিসেম্বরে তিনি আসবেন। আর যদি শেখ হাসিনাকে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ও তার ছেলে মাহি বি চৌধুরীকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখার খায়েশ থাকে তাহলে বাংলাদেশের মানুষ তাকে (বি চৌধুরীকে) চায় না।

তিনি বলেন, ‘এখন সংযত ভাষায় কথা বলতে শুরু করেছে সরকার। আমরা এটাই চেয়েছিলাম। দেশের মানুষ আজ মুক্তি চায়। আমরা একটু সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। এই লক্ষ্যেই আমি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একাত্মতা ঘোষণা করলাম। আমি এই মুহূর্ত থেকে ঐক্যফ্রন্টের অংশ।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু ও মোহাম্মদ শাহজাহান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, গণফোরাম নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মফিজুল ইসলাম কামাল ও সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে চা খাওয়ার জন্য ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

প্রসঙ্গত, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার বিষয়ে এর আগেও কাদের সিদ্দিকীকে নিয়ে গুঞ্জন ছিল। গত ৩ নভেম্বর নিজের অবস্থান পরিষ্কার করবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। শনিবার জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত সভায় তিনি ঘোষণা দেবেন বলে ধারণা করা হয়েছিল।

কিন্তু সভার শুরুতে বিপত্তি দেখা দেয়। বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি বি চৌধুরীকে সভায় উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ড. কামাল হোসেন উপস্থিত থাকায় সভায় আসেননি বি চৌধুরী।

সভায় কাদের সিদ্দিকী তার বক্তব্যের মাঝে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য আরও ২ দিন অপেক্ষা করতে বলেছেন। বি চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনা করে সার্বিক ঐক্যের জন্য তিনি সময় নিচ্ছেন বলে ধারণা করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, যদি ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে ৫ তারিখ বিকাল সাড়ে ৪টায় দলবল নিয়ে রাজধানীর বেইলী রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় গিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করবেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আমাকে যোগ দিতে বলেছেন। আমি যদি যোগ দেই, তাহলে মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করবো। আর যদি আপনাদের সঙ্গে নাও থাকতে পারি, তাও জানিয়ে দেবো। তবে, যেদিন প্রধানমন্ত্রী আপনাদের সঙ্গে সংলাপ করেছেন, আপনাদের বিজয় হয়ে গেছে। আমি যেখানেই থাকি না কেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের আগে মনে হয়েছিল আওয়ামী লীগ ২০ সিট পাবে উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘গত ৪ দিন ধরে আমার দেখছি, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ১৯ সিট পাবে। এর বেশি পেলে আমাকে সাজা দিয়েন।’

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘জাতীয় ৪ নেতার স্বপ্নকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর চিন্তাতেও ছিল জাতীয় ঐক্য। এখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো আমরা।’ তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অনেকে চেষ্টা করেছে। কিন্তু কেউ পারেনি। স্বৈরাচারও চেষ্টা করেছে। আগামীতেও কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। বাঙালিকে কেউ পরাজিত করতে পারেনি। জাতির পিতা সেটা প্রমাণ করেছেন।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত