সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ আগস্ট, ২০১৫ ১২:২৬

‘শুনানির কিছু নেই, পদত্যাগ করবো’

আগামী ৬ সেপ্টেম্বর আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর এমপি পদ নিয়ে বিতর্কের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে নির্বাচন কমিশন

আমি এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করবো। এটি নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই, শুনানির কিছু নেই।

নিজের সংসদ সদস্য পদ থাকা না থাকার বিতর্কের শুনানিতে পদত্যাগ করবেন বলে ইসিকে জানিয়েছেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।

রবিবার (২৩ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সভাকক্ষে এ শুনানি শুরু হয়। পনের মিনিটের এ শুনানিতে আইনজীবীদের নিয়ে অংশ নেন দলীয় পদ ও মন্ত্রিত্ব হারানো লতিফ সিদ্দিকী।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন তার আইনজীবীরা।

শুনানির জন্য আইনজীবীদের নিয়ে লতিফ সিদ্দিকী বেলা পৌনে এগারটার দিকে ইসিতে হাজির হন। এর পর পরই হাজির হন সৈয়দ আশরাফের আইনজীবীরা।

এদিকে সকালেই শুনানি আয়োজনে ইসির এখতিয়ার না থাকার বিষয়ে লতিফ সিদ্দিকীর দায়ের করা রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে।

এতে তার সংসদ সদস্যপদ নিয়ে শুনানিতে নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার রায়ই চূড়ান্ত হয়। এ রায়ে লতিফ সিদ্দিকীর ভাগ্য নির্ধারণে সর্বোচ্চ আদালত নির্বাচন কমিশনকেই দায়িত্ব দেওয়ার পর তার আইনজীবীরা জানান, তারা শুনানিতে যাচ্ছেন।

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেছেন, আগামী ৬ সেপ্টেম্বর আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর এমপি পদ নিয়ে বিতর্কের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেদিনই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রবিবার (২৩ আগস্ট) শুনানি শেষে ইসি সচিবালয়ের নিজ কক্ষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

শাহ নেওয়াজ বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য থাকা না থাকা নিয়ে শুনানি করেছি। তিনি পদত্যাগ করে তার সমস্যার সমাধান করবেন এবং এজন্য সময়ের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন। এজন্য তিনি সময় চেয়ে আবেদনও করেছেন। তার শুনানি মুলতবির আবেদন গ্রহণ ও মঞ্জুর করে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। সেদিন শুনানিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করলে কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে শাহ নেওয়াজ বলেন, এর মধ্যে তিনি যদি পদত্যাগ করেন, তা নির্দিষ্ট মতে নির্দিষ্ট আইন মেনে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছেই করতে হবে। পদত্যাগের বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য আসলে আমরা ৬ সেপ্টেম্বরই সিদ্ধান্ত নেবো।

এর আগে শুনানি থেকে বের হয়ে লতিফ সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, তার নেতা চান না বলেই তিনি এমপি পদ নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করতে চান না। দলের প্রতি, নেতার প্রতি আস্থা ও আনুগত্যের অংশ হিসেবে তিনি স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।

গত ১৩ জুলাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদকে চিঠি দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। এতে লতিফ সিদ্দিকীর এমপি পদ থাকা না থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়। সে মোতাবেক বিরোধটি নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া হাতে নেয় ইসি।

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগে দু’পক্ষকেই শুনানির সুযোগ দেওয়া উচিত। তাই তাদের শুনানি হবে।

আইন অনুযায়ী, বিরোধ উত্থাপনকারী ও যার বিরুদ্ধে বিরোধ উত্থাপন হয়েছে, উভয়পক্ষই শুনানিতে সাক্ষ্য উপস্থাপন ও জেরা করার সুযোগ পাবেন। এছাড়া তারা ব্যক্তিগতভাবে অথবা অ্যাডভোকেট প্রতিনিধির মাধ্যমে ইসির সামনে উপস্থিত থাকার অধিকার পাবেন।

নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী হজ, তাবলীগ জামাত, জামায়াতে ইসলামির রাজনীত ও সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করার পর দেশের অভ্যন্তরে ধরমাশ্রিত রাজনৈতিক দলগুলো লতিফ সিদ্দিকীর ফাঁসির দাবি, মন্ত্রীত্ব থেকে বাদ দেওয়া এমনকি সংসদ থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রথমে মন্ত্রিসভা থেকে তাকে বাদ দেয় সরকার। এরপর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আরও পরে তার প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করে দলটি। আর সবশেষ তার সংসদ সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দু’পক্ষকে নিয়ে শুনানির আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত