ক্রীড়া প্রতিবেদক

২৩ মার্চ, ২০১৬ ০১:২৩

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ‘শেষ ম্যাচ’ খেলবেন আফ্রিদি

এর আগে অনেকবার ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন, কিন্তু তবু ফিরে ফিরেছিলেন ক্রিকেটে। ব্যাটে রান নেই, বয়সের কারণে ফিল্ডিংটাও সেভাবে করতে পারেন না, অধিনায়কত্ব করছিলেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কিন্তু সেখান থেকেও নেই উল্লেখযোগ্য অর্জন। বাকি থাকে কেবলই বোলিং- হ্যাঁ, সেখানে একটু-আধটু দিচ্ছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেটকে।

সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে ফাইনালে তুলতে ব্যর্থ হওয়ার পর তবু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তার ওপর ভরসা রেখেছিল। ভরসা করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের অধিনায়ক হিসেবে পাঠিয়েছিল। এনিয়ে সমালোচনাও হয়েছিল খোদ পাকিস্তানে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর সুপারটেন থেকে বিদায় নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা কেবলই বাকি। এমন পরিস্থিতিতে বুঝি বহিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা টের পেয়ে নিজে নিজেই ইঙ্গিত  দিলেন অবসরের।

তবে এখনই নিচ্ছেন না তিনি, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আর একটা ম্যাচ খেলেই অবসরে যাবেন অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। ইঙ্গিত অনুযায়ি অস্ট্রেলিয়ার (২৫ মার্চ) বিপক্ষে ম্যাচটিই হচ্ছে তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর আফ্রিদি অবসরের ইঙ্গিত দেন। এর মাধ্যমে শেষ হচ্ছে তার ক্যারিয়ারের। এর আগে অবশ্য বিদায় নিয়েছেন ওয়ানডে ও টেস্ট থেকে।

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪৯ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস খেলে পুরনো সে আফ্রিদিকে আবারও ফেরানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে বরাবরের মত ব্যর্থ এ হার্ডহিটার, ফলে দলও হেরেছে; আর একই সঙ্গে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়াটাও হয়েছে নিশ্চিত।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচ শেষে আফ্রিদি জানান, সম্ভবত অস্ট্রেলিয়ার (২৫ মার্চ) বিপক্ষে ম্যাচটিই হচ্ছে আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও আমরা পূর্বের ভুলগুলো করেছি। এটা দলের জন্য মোটেও ভালো হয়নি। আমি আমার ক্যারিয়ারের একেবারেই শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। অজিদের বিপক্ষে ম্যাচটির অপেক্ষায় রয়েছি।

২০১৪ সালে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বভার পাওয়া আফ্রিদি অবসর প্রসঙ্গে আরও বলেন, আমি চেয়েছিলাম ২০১৬ সালের বিশ্বকাপ খেলতে। আমি সেটা পেরেছি বলে খুশি। পাকিস্তানের মতো দলের হয়ে এই পর্যায় পর্যন্ত ক্রিকেট খেলা সত্যিই দারুণ গর্বের বিষয়।

গত এশিয়া কাপের মিশনে ভারতের বিপক্ষে হারের পর শহীদ আফ্রিদির নেতৃত্ব নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে আসর থেকে বিদায় নেওয়ার পর সেই সমালোচনার উত্তাপ আরও বাড়ে। এরপরও ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার উপর নির্ভর করেছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের পড়তি ক্রিকেটধারা আর আফ্রিদির পারফরম্যান্সের কারণে তাকে নিয়ে সমালোচনার মাত্রাটা এতটাই বেশি ছিল যে, খোদ পিসিবি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান চাইছেন বিশ্বকাপ শেষেই আফ্রিদিকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দিতে। এমনকি খেলোয়াড় হিসেবেও তাকে হয়তো খুব বেশিদিন দেখা যাবে না-এমন ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন শাহরিয়ার।

শাহরিয়ার খান জানান, ‘ফল যা-ই হোক না কেন, আফ্রিদি আর অধিনায়ক থাকছেন না। ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ শেষে সে অবসর নিতে চেয়েছিল। কিন্তু, বিশ্বকাপ শেষে যদি তার মানসিকতার পরিবর্তন হয় আর সে খেলা চালিয়ে যেতে চায়, আমরা ভেবে দেখবো একজন ক্রিকেটার হিসেবে তাকে দলে প্রয়োজন আছে কী না। তবে, নেতৃত্বের ভার তাকে পুনরায় দেওয়া হবে না।

শহীদ আফ্রিদি পাকিস্তানের হয়ে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ৯৭টি। এর মধ্যে ৮৯ ইনিংসে ১৮.০৬ গড়ে রান করেছেন ১৩৯১। সর্বোচ্চ রান ৫৪*। এছাড়া তিনি উইকেট নিয়েছেন ৯৭টি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত